মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, নীহাররঞ্জন ঘোষ, বীরপাড়া ও মাদারিহাট: এই বারলা কি সেই বারলা? প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে জেতা বারলা বরাবরই ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়াই হোক, কিংবা সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দেওয়া, সবসময় জোরালো কণ্ঠেই কথা বলতে দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার দলের প্রার্থী মনোজ টিগ্গার হয়ে প্রচারে হাসিমুখে নামলেন ঠিকই, তবে সেই দাপটটাই যেন গায়েব।
সোমবারই তো বানারহাটের বাড়িতে মনোজের সঙ্গে মিটিং সেরে বারলা জানিয়ে দিয়েছিলেন, এবার একসঙ্গে প্রচার করবেন। সেইমতো এদিন ভুটান সীমান্তের লঙ্কাপাড়া, হান্টাপাড়া, ধুমচিপাড়া, গ্যারগান্ডা চা বাগানে ও টোটোপাড়ায় বারলাকে সঙ্গে নিয়েই প্রচারে যান মনোজ। বারলা মনোজের হয়ে ভোটও চেয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও করেছেন। সবই ঠিক ছিল, কিন্তু যাঁরা বারলাকে চেনেন, বলছেন, তাঁর গলায় পুরোনো ঝাঁঝটাই নিখোঁজ।
গত বছরের জুলাই মাসে বীরপাড়ায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মঞ্চে বারলার দাপট ছিল আলাদাই। এবছরের ৬ মার্চ মাদারিহাটে রেলমন্ত্রকের আধিকারিক ও সংবাদমাধ্যমের সামনেই মনোজের ওপর রীতিমতো চোটপাট করেন। তখনও বারলার বিশ্বাস ছিল, হয়তো শেষমুহূর্তে চাকা ঘুরতে পারে। কিন্তু ঘোরেনি। এদিন মনোজকে ফের ভাই বলে সম্বোধন করলেও তিনি যে মোদিজির জন্যই প্রচারের ময়দানে নেমেছেন তা জানিয়ে দেন সাংসদ। পাশাপাশি, বজায় রাখেন ‘আমিত্ব’। তাঁর সাফ কথা, ‘ডুয়ার্সের চা বলয়ে বিজেপির সংগঠন আমিই গড়ে দিয়েছিলাম।’ বারলা বলছেন, ‘মোদিজির আশীর্বাদে মন্ত্রী হয়েছি। আশা করছি, মোদিজি ফের আমাকে ওই জায়গায় নিয়ে যাবেন। আমাকে দিয়ে কাজ করাবেন।’ কী কাজ? সদুত্তর মেলেনি।
মনোজের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি যে ক্ষতি করেছেন, তার ড্যামেজ কন্ট্রোল কি করা যাবে? তার জবাবও মেলেনি। এসব প্রশ্ন এড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘সংবাদমাধ্যম ভুল বার্তা দিয়েছে।’
আর মনোজ বলেছেন সেই একই কথা, বড় পরিবারে একটু ঠোকাঠুকি হতেই পারে।