প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: আর সপ্তাহখানেক পর থেকেই শুরু হবে মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা। এখন উত্তরবঙ্গে আবহাওয়ার (Weather) যে অবস্থা, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীনও সকালে কুয়াশার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। তার উপর আবার এবার পরীক্ষার সময়ও এগিয়ে এসেছে। আলিপুরদুয়ার জেলার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে সময়ে পৌঁছাতে গেলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে দুর্গম এলাকার পরীক্ষার্থীদের। বিশেষ করে বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকার পরীক্ষার্থীদের তো আরও সমস্যা। কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকার সুযোগ নিয়ে বুনোর মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল ৬টা থেকে বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় টহল দেবেন বনকর্মীরা।
গত বছরের মতো এবারেও বনবস্তি এলাকার পড়ুয়াদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। এছাড়া কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্রের জন্য একটি করে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা থাকবে। সোমবার ডুয়ার্সকন্যায় মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা শাসক আর বিমলা, পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী, বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশানুল করিম সহ বন, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পরিবহণ দপ্তর ও দমকলের কর্তাব্যক্তিরা।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আশানুল বলেন, ‘এদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে একাধিক বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেমন বনকর্মীরা সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালাবেন। একাধিক নতুন রুটে বাস চলবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার পরিচালনার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
সকাল সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ রয়েছে। এদিকে সম্প্রতি শীতের প্রকোপের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার দাপটও রয়েছে। সকালবেলায় অনেক সময় বন্যপ্রাণীরা জল ও খাবারের সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করে। তাই হাতির করিডর সহ জঙ্গল এলাকা দিয়ে পড়ুয়াদের যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। তাই একেবারে সকাল থেকেই বনকর্মীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দলগাঁও-বীরপাড়া এলাকায় ডলোমাইট লোডিং-আনলোডিং করার সময় মালবাহী গাড়ির চলাচল বৃদ্ধি পায়। তাতে সেখানকার পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্যা হতে পারে। সেজন্য পরীক্ষা চলাকালীন সেখানে ডলোমাইটের গাড়ির টাইম টেবিল বদলানোর বিষয়ে রেলকে চিঠি দেওয়ার কথাও হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
সব জায়গায় ডাম্পার চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। সরকারি বাস ছাড়াও বেসরকারি বাস সহ ছোট-বড় সমস্ত যাত্রীবাহী যানবাহনকে পথে নামার নির্দেশ দেওয়ার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ টিম থাকবে। পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট যাতে না হয় তাও দেখা হবে। কোনওরকমে পরিস্থিতি সামলাতে দমকলকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
মাধ্যমিকের আহ্বায়ক শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী বলেন, ‘জেলায় পরীক্ষার্থীদের সুষ্ঠু যাতায়াতের ক্ষেত্রে এবারও বন দপ্তর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। প্রান্তিক এলাকাগুলিতে সরকারি-বেসরকারি বাস সহ ছোট যানবাহন চলাচলের বিশেষ অনুমতি থাকবে।’