বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ি (Mainaguri) পুরসভার তকমা পাওয়ার পর ৩ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও কার্যত গৃহহীন অন্তত ২ হাজার পরিবার। হাউসিং ফর অল প্রকল্পের অনুমোদন মেলেনি। পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গেলেই নজরে পড়বে জরাজীর্ণ বসতবাড়ি। তার সংখ্যা নেহাত কম নয়। পুরোনো ভাঙা টিনের টুকরো কিংবা পলিথিন টাঙিয়ে কোনওরকমে মাথাগোঁজার আশ্রয়টুকু করে নিয়েছেন অনেকে।
বর্ষায় দুর্ভোগ চরমে ওঠে। বৃষ্টির জলে ভিজে একাকার হয়ে যায় সমস্ত আসবাব। শীতে (winter) হাড়কাঁপানো পরিস্থিতি। পুর এলাকা হলে নাকি সবার জন্য ঘর মেলে এমনটাই জানেন নাগরিকরা। তাঁরা কবে ঘর পাবেন, জানতে চাইছেন মালতী সাহা, প্রদীপ মণ্ডলরা।
পুরসভার (Maynaguri Municipality) ভাইস চেয়ারম্যান মনোজ রায় বলেন, ‘হাউজিং ফর অল প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সমীক্ষাও শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানিয়েছি।’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৈদ্যনাথ চৌধুরী পেশায় দিনমজুর। তাঁর বসবাসের ঘর নেই। পুরোনো ভাঙা টিনের টুকরো এবং পলিথিন টাঙিয়ে মাথাগোঁজার ঠাঁই তৈরি করেছেন। এই ওয়ার্ডেরই আরেক বাসিন্দা মালতী সাহা। পলিথিন টাঙিয়ে ছোট্ট একচিলতে ঘর বেঁধেছেন। সেখানেই রান্না, খাওয়াদাওয়া এবং রাতের ঘুম। পুত্রবধূ কবিতা সহ দুই নাতনি বর্ণি এবং অনুশ্রীতিকে নিয়ে এখানেই দিন গুজরান। মালতী বলেন, ‘স্বামী ফলের দোকানে কাজ করেন। এই ঘরে খুব কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছি।’
১ নম্বর ওয়ার্ডের পেটকাটির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল পেশায় দিনমজুর। মেয়ে দৃষ্টি নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে নিয়ে একচিলতে পলিথিনের ঘরেই থাকাখাওয়া এবং রান্নাবান্না। প্রদীপের কথায়, ‘অসহায়ের মতো দিন কাটছে। নিজের জায়গা থাকলেও ঘর বানাবার সামর্থ্য নেই।’
পুর এলাকা ঘুরলেই এমন বহু পরিবারের দেখা মিলবে। কেউ পেশায় দিনমজুর, ভ্যানরিকশাচালক, টোটোচালক, কোনও দোকানের কর্মচারী কিংবা কেউ পরিচারিকার কাজ করেন। অধিকাংশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলাররা সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।