সামসী: ফের ভিনরাজ্যে কাজে মৃত্যু হল মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃতের নাম আরিফুল হক (৩২)। বাড়ি মালদা জেলার চাঁচল-২ নম্বর ব্লকের মালতীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁন্দুয়া গ্রামে। চাঁন্দুয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আমিনুল হক জানান, মৃত পরিযায়ী শ্রমিক আরিফুল হক গত চার মাস আগে চেন্নাইয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে সে এক ঠিকাদারের অধীন বিল্ডিং নির্মাণের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কর্মরত অবস্থায় পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হন। অন্য সহকর্মীরা ছুটে এসে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর কফিনবন্দি দেহ বুধবার দুপুর দুটো নাগাদ নিজ গ্রাম চাঁন্দুয়া এসে পৌঁছায়। দেহ বাড়িতে ফিরতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা পরিবারে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত আরিফুলের বাবা-মা নেই। দুজনই মারা গিয়েছেন। আরিফুলরা দুই ভাই ও এক বোন। পরিবারের সবার ছোট আরিফুল। সে বিবাহিত। রয়েছে স্ত্রী ও চার নাবালক সন্তান। তাঁর কোনও জমি জায়গা নেই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কয়েক কাঠা ভিটে বাড়ি সম্বল। তাতে ভাঙাচোরা বাড়ি। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে গিয়েছিলেন সুদূর চেন্নাই।
মৃত আরিফুলের স্ত্রী জাহানারা খাতুন অকালে স্বামীকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। শোকাহত গলায় তিনি জানান, রবিবার কাজে যাওয়ার আগে সকাল বেলা শেষ কথা হয়। ছেলেমেয়ে সকলের খোঁজখবর নিয়ে বকরি ইদের সময় বাড়ি আসবে বলেছিল। স্বামীর অবর্তমানে এখন তাঁর নিজের ও ছেলেমেয়েদের কি হবে? কিভাবে চলবে তাঁর সংসার? এমন নানা প্রশ্ন তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মনোয়ার হাসনাইন বলেন, ‘অভাবী পরিবার। জমি জায়গা নেই। তাই অসহায় পরিবারটির জন্য সরকারি সাহায্য খুব প্রয়োজন। তাঁর স্ত্রীর জন্য বিধবা ভাতা, একটি আবাস যোজনার পাকা ঘর ও পারিবারিক কল্যাণ সহায়তা প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পাওয়া খুব দরকার।‘