নাগরাকাটা: ভালো ফলের ধারাবাহিকতা এখানে নতুন কিছু নয়। এবার মাধ্যমিকে একশো শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী পাশ করেছিল। উচ্চমাধ্যমিকেও ফলাফলে (HS Result 2024) তাক লাগিয়ে দিল নাগরাকাটার একলব্য মডেল স্কুল (Nagrakata Eklavya Model Residential (HS) School)। শহরের নামীদামি স্কুলগুলিকে টেক্কা দিয়ে এখান থেকে প্রত্যেকেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্টার পেয়েছে (৭৫ শতাংশের বেশি) ৩৩ জন। ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ২৮ জন।
সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে নাগরাকাটার গাঠিয়া চা বাগানের টিনা লাকড়া (৪৬৩)। শতাংশের হিসেবে ৯২.৬। টিনার বাবা যুগল লাকড়া সেখানকার শ্রমিক। মা শিবদাসী লাকড়া অঙ্গনওয়াড়ি হেল্পার। কলা বিভাগের ওই ছাত্রী প্রথম ভাষা হিন্দিতে ৯৩, দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজিতে ৯৬, ভূগোলে ৯০, ইতিহাসে ৯২, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯২ ও অর্থনীতিতে ৮৭ পেয়েছে। টিনা ভবিষ্যতে অধ্যাপক হতে চায়। স্কুল থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক দৃ্ষ্টি লিম্বু (৪৫৬)। তাঁর বাড়ি নাগরাকাটার লুকসান চা বাগানে। কালচিনীর জয়ন্তী চা বাগানের খুশি মাহালির প্রাপ্ত নম্বর ৪৫১। এছাড়াও ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে নাগরাকাটা চা বাগানের এস্টুইনি কুজুর (৪৫০) নামে আরও এক ছাত্রী। ছাত্রদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে জয় লোহার (৪২২)।
একলব্যর পরীক্ষার্থীদের সবাই প্রত্যন্ত চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের জনজাতি সম্প্রদায়ের। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগ পরিচালিত স্কুলটিতে এখন খুশির হাওয়া। এই বিভাগের জলপাইগুড়ির প্রকল্প আধিকারিক প্রবীণ লামা বলেন, ‘গর্বের মুহুর্ত। দ্রুত প্রত্যেককে সংবর্ধনা দিতে যাব।’ স্কুলের টিআইসি সংগম রাইয়ের কথায়, ‘ছাত্র-শিক্ষক মিলিত প্রচেষ্টাই ভালো ফলের ইউএসপি। সঙ্গে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার ওপর জোর দেওয়ার প্রভাবতো রয়েইছে।’
এবছর ৫৮ জন ছাত্র-ছাত্রী সেখান থেকে পরীক্ষায় বসেছিল। ৯০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর ৪ জনের। মোট ৩৩ জন ছাত্রীর প্রত্যেকেই ৭৫ শতাংশের বেশি পেয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জনের নম্বর ৮০ শতাংশ বা ৪০০-র বেশি। ২৫ জন ছাত্রও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্কুল সূত্রে খবর, এনিয়ে পরপর ৬ বছর একলব্য থেকে উচ্চমাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করল। ছাত্রীদের ফল এবছরই সবচেয়ে ভালো। আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি টোটো, মেচ, রাভা, তামাং, শেরপা, লামা, লিম্বু-সুব্বা জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করে। তবে চমকপ্রদ ফল করার পরও উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তাদের অভিভাবকরা।