নাগরাকাটা: বেসরকারি রিসর্টে ঢুকে সেখানে কাজ করতে আসা এক ব্যক্তিকে ছিন্নভিন্ন করে দিল দলছুট দাঁতাল। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে নাগরাকাটার সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ডাঙ্গাপাড়ায়। পাশাপাশি, সেরাতেই অন্য আরেকটি ঘটনায় ওই পঞ্চায়েতেরই হাজিপাড়ায় ধানখেতে প্রহরারত ৪ জন যুবক হাতির আক্রমণে কম-বেশি জখম হন। সব মিলিয়ে হাতির হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনা থামার কোনও লক্ষণই নেই নাগরাকাটায়।
বন দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুনীল দাস (৪১)। বাড়ি নদিয়ার পলাশির উত্তর হাজরাপোতাতে। কিছুদিন আগে তিনি জলঢাকা নদী থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত ওই রিসর্টে রংয়ের কাজ করতে এসেছিলেন। দিনদুয়েক পরেই তাঁর কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে গতরাতে একটি দাঁতাল ওই রিসর্টের ভেতর ঢুকে পড়লে তিনি টের পেয়ে পালাতে যান। হাতিটি সেসময় তাঁকে সেখানেই পিষ্ট করে দেয়। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় গোটা শরীর।
গত দেড় মাসের হিসেব বলছে এখনও পর্যন্ত এই ব্লকে ৪ জনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হল। জখমের সংখ্যাও একাধিক। রিসর্ট থেকে দেহ আনতে গেলে বুধবার বন দপ্তর ও পুলিশকে স্থানীয় উত্তেজিত জনতার রোষের মুখে পড়তে হয়। বুধবার বিকেলে সুলকাপাড়ায় আসেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি সীমা চৌধুরী। তিনি হাতি উপদ্রুত এলাকাটিতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সীমাদেবী বলেন, ‘পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। বন, বন্যপ্রাণ ও সেইসঙ্গে মানুষ প্রত্যেকেই যাতে সুরক্ষিত থাকে সেব্যাপারে সমাধানসূত্র বের করা অত্যন্ত জরুরি। বন দপ্তর, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্রুত যাতে আলোচনা করে এব্যাপারে রূপরেখা তৈরি করা হয় সেই আর্জি জানাচ্ছি।’
বন দপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার খুনিয়ার রেঞ্জার সজল দে বলেন, ‘লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে বনকর্মীদের প্রচেষ্টায় কোনও খামতি নেই। বৃহস্পতিবার ডাঙ্গাপাড়াতে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হবে।’