ময়নাগুড়ি: হাসপাতালমুখী এক কথায় হন না বললেই চলে, ওষুধের থেকেও মুখ ফিরিয়েছেন একশো ছুঁই ছুঁই প্রবীণ শিল্পী পদ্মশ্রী মঙ্গলাকান্ত রায়। (Mangala Kanta Roy) শরীর সুস্থ ও ঠিক রাখতে প্রবীণের দাওয়াই, নিয়ম করে রোজ তিন কিলোমিটার রাস্তা হাঁটা। সকাল বিকেল হেঁটে ঘোরার সঙ্গে সকালের আহারে শামিল দই ও চিড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে এভাবেই নিত্যদিনের রুটিনের মধ্য দিয়ে চলে আসছেন উত্তরের বিশিষ্ট সারিন্দাবাদক মঙ্গলাকান্ত। শীতের পড়ন্ত বিকেলে ময়নাগুড়ির ধওলাগুড়ি গ্রামের রাস্তায় এভাবেই দেখা মিলল পদ্মশ্রী (Padmashree) পুরস্কার প্রাপ্ত এই শিল্পীর। জিজ্ঞেস করলে উত্তরে বললেন এটা দীর্ঘকালের অভ্যাস। শরীর ঠিক রাখতে হাঁটার কোনও বিকল্প হয় না, নব্বই অতিক্রান্ত এই প্রবীণ শিল্পী বয়সের ভারে কিছুটা ক্লান্ত হলেও শরীর সুস্থ রাখতে এই হাঁটাকেই বেছে নিয়েছেন।
বহুবছর ধরে চলে আসা প্রতিদিনের এই অভ্যাস আজও অটুট, প্রতিদিনই সূর্য উঠবার আগেই বিছানা ছাড়েন এই প্রবীণ। কাঠের ভাঙাচোরা সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসে ভোরেই সেরে ফেলেন স্নানপর্ব। স্নান শেষে সূর্য প্রণাম করে বাড়ির রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে কিছুটা সময় কাটান৷ এরপরে বেরিয়ে পরেন হাঁটতে। বাড়ি থেকে গ্রামের রাস্তা ধরে ধওলাগুড়ি হয়ে সোজা বেরিয়ে পরেন। এরপর প্রায় এক ঘন্টা হাঁটা শেষে বাড়িতে ফেরেন। মঙ্গলাকান্তের বড় ছেলে উমাকান্ত রায় বলেন, ‘বাবা বহুবছর ধরেই ভোরে স্নান করে বেরিয়ে যান। বছরের বারো মাসই এই রুটিন থাকে। শীত-কুয়াশার মাঝেও সেই অভ্যাস পরিবর্তন করেননি।’ মঙ্গলাকান্তের স্ত্রী চম্পা রায় জানান, ‘বাড়ির গরুর দুধের দই পছন্দের তালিকায় রয়েছে, প্রতিদিন সেই দুধ দিয়ে দই তৈরি করেন হেঁটে ফেরার পর বাড়ি ফিরে এসে খান পছন্দের দই ও চিড়ে।’ মঙ্গলাকান্ত জানান, দই ও চিড়ের বিকল্প নেই। ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম দই চিড়ে প্রতিদিনই এই তালিকায় থাকে। শরীর সুস্থ রাখতে দিনে একবারই ভাত খান। রাতে খান সামান্য চা কিংবা দুধ। এভাবেই বছরের পর বছর চলে আসছে।
জ্বর, সর্দি,কাশি এতোদিন সেভাবে কাবু করতে পারেনি এই প্রবীণ শিল্পীকে। ওষুধের প্রতি অনীহা দীর্ঘদিন থেকেই। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ রায় বলেন, ‘ছোটো থেকেই উনাকে দেখে আসছি একই রকম আছেন। সকাল বিকেল নিয়ম করে হেঁটে বেরিয়ে পরেন। রাস্তায় অনেক পথচলতি মানুষের সঙ্গে দেখা কথা হয়। অনেকেই আবদার করে বসেন সেলফি তোলার, হাসি মুখে সকলের সেই আবদারও মেটান মঙ্গলাকান্ত।’