রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: ভোটের মুখে ফের পাহাড় সমস্যা মেটানোর দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দরবারে জিএনএলএফ (GNLF)। বুধবার রাতে দিল্লির নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা’র (Amit shah) সঙ্গে বৈঠক করেন জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিং (Mann Ghising Meets Amit Shah)। বৈঠকে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট (Raju bista) এবং বিজেপির পার্বত্য শাখার সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান অংশ নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকার পাহাড় সমস্যা সমাধানের দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে বলে মন দাবি করেছেন।
রাজু বলছেন, ‘পাহাড় সমস্যার সমাধান একমাত্র বিজেপিই করতে পারে। ভোটের আগেই পাহাড় নিয়ে কিছু একটা হবে।’ অন্যদিকে এদিনই পাহাড়ে বিজেপি এবং হামরো পার্টি থেকে পাঁচজন জনপ্রতিনিধি অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় (বিজিপিএম) (BGPM) যোগ দিয়েছেন। অনীত বলেছেন, ‘আমরা বিজেপির মতো ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। পাহাড়ের উন্নয়নই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। উন্নয়নের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের দলে আসছেন।’
গত ২৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা রাহুল গান্ধির (Rahul gandhi) সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী। সেই খবর ছড়াতেই পাহাড়জুড়ে তীব্র আলোড়ন পড়ে। জিএনএলএফ কি তাহলে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে? এই প্রশ্নই উঠেছিল সর্বত্র।
তবে, জিএনএলএফ তড়িঘড়ি প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল যে, মহেন্দ্র ছেত্রীর ওই বৈঠক ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। জিএনএলএফ বিজেপির সঙ্গেই এনডিএ জোটে রয়েছে। রটনা এটাও ছিল যে, সাংসদ রাজুর চাপাচাপিতেই জিএনএলএফ ওই প্রেস বিবৃতি দিয়েছিল। তারপরেই মহেন্দ্র ছেত্রীকে দল থেকে দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড করে মন ঘিসিংয়ের পার্টি।
এরপরেই দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) সাংসদও জিএনএলএফকে নিয়ে দিল্লিতে তদ্বির করার সিদ্ধান্ত নেন। সূত্রের খবর, অমিত শা’র কাছে সময় চেয়ে রাজু কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়েছিলেন। সেইমতোই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার রাতে ওই বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছিলেন। বুধবারের বৈঠকে মন ঘিসিং দলের তরফে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, বিজেপি ২০০৯ সাল থেকে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। সেই আশ্বাসেই পাহাড়ের মানুষ লোকসভা এবং বিধানসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। ১৫ বছর পরও পাহাড় কিছু পায়নি। পাহাড় সমস্যার সমাধানে এটাই উপযুক্ত সময় বলেও তিনি দাবি করেছেন।
মন বলছেন, ‘অমিত শা দ্রুত পাহাড় নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিজেপি নেতৃত্বের উপরে আশাবাদী। আশা করছি, ভোটের আগেই পাহাড় নিয়ে কোনও পদক্ষেপ হবে।’
অন্যদিকে এদিন দার্জিলিংয়ে বিজেপি এবং হামরো পার্টি থেকে পাঁচজন পঞ্চায়েত প্রতিনিধি বিজিপিএমে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে দীক্ষা ছেত্রী, সঞ্চিতা লামা পঞ্চায়েত সমিতির এবং রেশমা গুরুং, দীপিকা রাই এবং সৃজন থাপা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। অনীতের কথায়, ‘দিল্লিতে অমিত শা’র সঙ্গে জিএনএলএফের বৈঠক নিয়ে আমরা ভাবছি না। ওখানে ভোটের সওদা হচ্ছে।’