গৌতম সরকার ও শুভ্রজিৎ বিশ্বাস, মেখলিগঞ্জ: বিভিন্ন রাজ্য থেকে মেয়েদের পাচার করে নিয়ে এসে পতিতাপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল। উত্তরবঙ্গ সংবাদে এনিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসন তদন্তে (Police Raid) নামে। ররিবার রাতে মেখলিগঞ্জ (Mekhliganj) থানার পুলিশ চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তের যৌনপল্লি এলাকা (Red Light Area) থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করল। ধৃতদের নাম শম্ভু বসাক ও সুনীতি দেবনাথ। তারা যথাক্রমে চ্যাংরাবান্ধা দক্ষিণপাড়া ও আলিপুরদুয়ারের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনাস্থল থেকে দুই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়।
ধৃতদের সোমবার প্রথমে মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। এরপর তাদের মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালত ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিশ হেপাজতে পাঠিয়েছে। শম্ভুর দাবি, ‘আমি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নই। বাড়িভাড়া দেওয়ায় আমাকে ধরা হয়েছে।’ কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘পতিতাবৃত্তি করানোর জন্য নাবালিকাদের নিয়ে এসে ওই এলাকার এক বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চ্যাংরাবান্ধা দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা হলেও শম্ভু চ্যাংরাবান্ধা যৌনপল্লি এলাকাতেও বাড়ি তৈরি করে তা ভাড়া দিয়েছে। সেখানে একাধিক ভাড়াটে আছে। দুই নাবালিকাকে সেখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে খবর পেয়ে রবিবার রাতে মেখলিগঞ্জের এসডিপিও বিক্রমজিৎ লামা, মেখলিগঞ্জ থানার ওসি রাহুল তালুকদারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ওই এলাকায় যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে ধরে নিয়ে বিএসএফের চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত চৌকির জওয়ানরা এলাকা ঘিরে রেখেছিলেন। ওই যৌনপল্লিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুই নাবালিকাকে উদ্ধার করার পাশাপাশি দুজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার খবর ছড়াতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
এই যৌনপল্লিটি বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে রয়েছে। এলাকায় উন্মুক্ত সীমানা দিয়ে নানা সময়ে অনুপ্রবেশ ও চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। নাবালিকাদের বাংলাদেশ থেকে পাচার করে এখানে নিয়ে আসাও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সমস্যা মেটাতে দ্রুত কড়া নজরদারি ব্যবস্থার দাবি জোরালো হয়েছে। পাশাপাশি, এই চক্রে যারা যুক্ত রয়েছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছে। রবিবার রাতের ঘটনায় ধৃতরা এই চক্রের পান্ডা কি না তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন।