মেখলিগঞ্জ, সজল দে: মেখলিগঞ্জ পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। একসময় বেশ সুনাম থাকলেও বর্তমানে শিক্ষিকার অভাবে ধুঁকছে স্কুলটি। ছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। অথচ স্থায়ী শিক্ষিকার সংখ্যা বর্তমানে মাত্র সাতজন। এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।
গত বছর প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া অবসর নেওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব নেন সহ শিক্ষিকা কল্পনা মোহন্ত। সম্প্রতি বড় ধরনের দুর্ঘটনার জখম হয়ে তিনি মেডিকেল লিভে। এখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ক্রীড়া শিক্ষিকা নীতি বর্মন। কল্পনাদেবী ছুটিতে থাকায় বর্তমানে স্থায়ী শিক্ষিকার সংখ্যা ছয়জন। তারমধ্যে নীতিদেবী ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হিসেবে স্কুলের কাজকর্ম দেখার ফলে পাঁচজন স্থায়ী শিক্ষিকা ক্লাস নেন। তার মধ্যে চাইল্ড কেয়ার লিভ ও অন্যান্য ছুটি রয়েছে।
পার্শ্বশিক্ষিকা রয়েছেন ছয়জন। একজন চুক্তিভিত্তিক এবং তিনজন অতিথি শিক্ষিকা রয়েছেন। স্থায়ী শিক্ষিকার অভাবে সিংহভাগ ক্লাসের দায়িত্ব তাঁদের কাঁধেই। শোচনীয় পরিস্থিতি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে। এই স্কুলে শুধু কলা বিভাগ রয়েছে। আটটি বিষয়ের মধ্যে মাত্র শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে স্থায়ী শিক্ষিকা আছেন। সেকারণে অতিথি শিক্ষিকা দিয়ে ইতিহাস, সংস্কৃত, দর্শন পড়ানো হচ্ছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা পড়ান। ইংরাজি ও ভূগোল পড়ানোর কেউ নেই। দশম শ্রেণি পর্যন্ত ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃত, অঙ্ক ও ইংরেজির স্থায়ী শিক্ষিকার সংখ্যা শূন্য।
গীতা রায় নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘এত কম সংখ্যক শিক্ষিকা থাকায় প্রতিদিন সব ক্লাস হয় না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’ আরেক অভিভাবক ধনঞ্জয় রায় জানান, আশপাশে কোনও বালিকা বিদ্যালয় না থাকায় এখানে তাঁর মেয়েকে ভর্তি করেছেন। কিন্তু পড়াশোনা মান কমছে। এত কম শিক্ষিকা দিয়ে উচ্চমাধ্যমিক স্কুল চলতে পারে না বলে তঁার বক্তব্য।বিষয়টি নিয়ে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অমিতাভ বর্ধন চৌধুরী বলেন, ‘অতিথি শিক্ষিকা নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরকে জানানো হয়েছে। তবে শিক্ষিকার সংখ্যা কম হলেও প্রত্যেকেই নিজের সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে পড়াশোনার মান ঠিক রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’