শালকুমারহাট: সন্তানদের পড়াশোনায় শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়েদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই কৃতী পড়ুয়াদের মায়েদের সংবর্ধনা জানিয়ে গত বছর তাক লাগিয়ে দিয়েছিল আলিপুরদুয়ারের প্রান্তিক জলদাপাড়ার লাল্টুরাম হাইস্কুল। এবারও স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে সব শ্রেণির কৃতী পড়ুয়াদের মায়েদের ডেকে সংবর্ধনা দেওয়া হল। গোটা আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন নজির নেই৷ বুধবার এই সম্মান পেয়ে মায়েরা দারুণ খুশি।
প্রধান শিক্ষক প্রাণতোষ পালের কথায়, ‘পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ভালো হওয়ার প্রতি শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আর সেক্ষেত্রে হয়তো মায়েদের অবদানটাই বেশি। তাই মায়েদের আরও বেশি উৎসাহ জোগাতে গতবারের চালু হওয়া অনুষ্ঠান এবারও করা হল।’ অনুষ্ঠানে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশানুর করিম, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এহসান হাবিব, ফালাকাটা পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ মুহুরি, শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীবাস রায়, আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ রাখি নার্জিনারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কথায়, ‘প্রধান শিক্ষকের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এজন্য সন্তানদের জন্য মায়েরা আরও বেশি অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।’
স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের মায়েদের এদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৬ জন পড়ুয়ার মায়েদের উত্তরীয় পরিয়ে স্মারক দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়। এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথম হয়েছে পর্ণা বিশ্বাস। তার মা পিংকি বিশ্বাস বলেন, ‘গতবার স্কুলের এমন অনুষ্ঠানের কথা জেনেছিলাম। তাই মেয়ের পড়াশোনার প্রতি বাড়তি নজর দিই। এদিন মেয়ের পাশাপাশি আমিও সংবর্ধনা পেলাম বলে ভালো লাগছে।’ সংবর্ধনা পেয়ে সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল বলে জানালেন সরলা রায়, কৌশল্যা রায়, ঝুনুবালা রায়দের মতো অভিভাবকরা।
গতবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তপশিলি উপজাতির মধ্যে ওই স্কুলের সুজন কার্জি রাজ্যের মধ্যে নবম হয়েছিল। গতবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রাণতোষ পালকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারও দেয় রাজ্য সরকার। আসলে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া প্রান্তিক এলাকায় শিক্ষার বিকাশে যথেষ্ট অবদান রয়েছে এই লাল্টুরাম হাইস্কুলের। স্থানীয়রা মনে করেন, ২০০০ সালে স্থাপিত এই স্কুলের জন্যই এলাকার ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছেছে। সন্তানদের নিয়মিত স্কুলে পাঠান অভিভাবকরা। আর এক্ষেত্রে মায়েদের নীরব অবদানকে স্বীকৃতি জানাচ্ছে স্কুল।