নাগরাকাটাঃ বালাসোরের সেই অভিশপ্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় বন্ধু সাগর খারিয়াকে চিরতরে হারানোর ক্ষত নিয়েই ভোট দিলেন তাঁর ১২ সঙ্গী। প্রত্যেকেই নাগরাকাটা চা বাগানের ফুটবল লাইনের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের ২ জুন ওই ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হন বাগানটির ওই শ্রমিক মহল্লার ১৩ তরুণ। প্রত্যেকেই বেঙ্গালুরুতে রিসেপশন পার্টি আয়োজনের একটি ঠিকাদারি সংস্থায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়লে সাগরের মৃত্যু হয়। বাকীরা জখম হন। পরে দীর্ঘ চিকিৎসায় এখন সুস্থ হলেও তাঁদের বেশিরভাগেরই স্থায়ী কোনও কাজ নেই। এদিকে আতঙ্কে ফের তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক হতে নারাজ। তাই বাগানেই রয়ে গিয়েছেন। শুক্রবার ভোট দেওয়ার পর রুটি রুজির সংস্থানে কাজের দাবিতে সরব হতে দেখা যায় তাঁদের।
দুর্ঘটনার পর মৃতের ভাই শিব খারিয়াকে রাজ্যের পক্ষ থেকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়। মিলেছে ক্ষতিপূরণের টাকাও। অন্যদিকে জখম ১২ জনের মধ্যে ৪ টি পরিবারের বাড়ির লোকেদের একজনকে সরকারী উদ্যোগে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তবে বাকীদের এখনো কিছু হয় নি। তবে তাঁরা ৬০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিন নাগরাকাটা চা বাগানের ১১৩ ও ১১৪ নম্বর বুথে ভোট দিয়ে দূর্গা বরাইক নামে এক তরুণ বলেন, আমাদের বিষয়টি যদি সরকার সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতেন তাহলে কিছুটা সুরাহা হত। রূপ বরাইক নামে আরেক তরুণ বলছেন, এখনও একটা হাত ঠিকমত ওঠাতে পারি না। বাগানেও যে শ্রমিকের কাজ জুটিয়ে নেব সেই উপায় কোথায়। ধর্মনাথ সিং নামে আরেক তরুণেরও হাতের একই অবস্থা। মৃত সাগরের বাবা বুধনাথ খারিয়াও চাইছেন যাদের এখনও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়নি তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে এব্যাপারে পদক্ষেপ করা হোক।
যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের সওয়ারী যে তরুণরা ওডিশার বালাসোরের বানাগানা বাজার স্টেশনের সামনে ওই ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়েন তাঁদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন প্রীতম লোহার, আমন ওরাওঁ, রোহিত গোস্বামী, বিজেন্দ্র ওরাওঁ, মুকেশ নায়েক, দয়া শংকর ওরাওঁ, নিশান ওরাওঁ, রাজ ভোক্তা, সাগর ওরাওঁ ও মানিক লোহার।