আলিপুরদুয়ার: সরস্বতীপুজোয় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল এক নাবালিকা। সেদিন রাতে আর বাড়িই ফেরেনি। সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর খোঁজ মেলে পরের দিন। অভিযোগ, তার সঙ্গী ধর্ষণ(Rape) করেছে তাকে। যে অভিযুক্ত, সেও স্কুল পড়ুয়া। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। অভিযোগ, ধূপগুড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে সেই কিশোরীকে।
শনিবার বিকেলে ওই দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার(Alipurduar) মহিলা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। নিগৃহীতা কিশোরী জয়গাঁর বাসিন্দা। তবে সম্প্রতি সে আলিপুরদুয়ার শহরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। সেই আত্মীয়ের বাড়ি থেকেই সে গত বুধবার ঘুরতে যাওয়ার নাম করে উধাও হয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেদিন রাতে বাড়ি না ফিরলে খোঁজখবর শুরু করে দেন বাড়ির লোকজন। পরে সেই রাতে থানাতেও যান তাঁরা। সেদিন আর সেই কিশোরীর খোঁজ মেলেনি। তবে সরস্বতীপুজোর পরের দিন, বৃহস্পতিবার ধূপগুড়ি এলাকায় ওই কিশোরী ও সেই অভিযুক্তের হদিস মেলে। এতেই কিশোরীর পরিবারের সন্দেহ হয়। পরে সেই কিশোরীকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তখনও অবশ্য ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। বাড়ি ফেরার পর কিশোরীর কথাবার্তা শুনে পরিজনদের সন্দেহ হয়। তারপর চেপে ধরলে মেয়েটি সব স্বীকার করে।
আলিপুরদুয়ার মহিলা থানার ওসি সেলিনা তামাং অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুজন পূর্বপরিচিত। জয়গাঁ এলাকার বাসিন্দা হলেও ওই কিশোরী আলিপুরদুয়ার শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। সরস্বতীপুজোর দিন অভিযুক্ত আলিপুরদুয়ার শহর থেকে কিশোরীকে প্রথমে হাসিমারায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ধূপগুড়ি এলাকায় নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ধূপগুড়িতে তার পুরোনো বাড়ি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই রাতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরের দিন আবার ওই অভিযুক্তের পরিবারের মদতেই নাকি ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এই বিষয় নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শুক্রবার নাগাদ ওই কিশোরী অসুস্থ হতেই সন্দেহ হয় বাড়ির লোকজনের। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই কিশোরী তার মায়ের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ করে। তারপরেই পরিবারের লোকজন বিষয়টি নিয়ে সরব হয়।
ওই কিশোরীর এক আত্মীয় বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতেই বেশ কিছুদিন ধরে ছিল ও। বুধবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। আমরা ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। ফোন সুইচড অফ বলছিল।’ ফলে বাড়ির লোকজন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে তার খোঁজ মিললে ধূপগুড়ি থেকে আর আলিপুরদুয়ার নিয়ে না গিয়ে জয়গাঁয় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ওই কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা করতে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত এখনও পাকড়াও না হওয়ায় এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছে না তারা।