শিলিগুড়ি: শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির অন্যতম বিবেকানন্দ রোড। সকাল থেকেই এ পথে যান চলাচলে বিরাম নেই। অথচ রাত গভীর হলেই এই রাস্তার ছবিটা বদলে যায়। রাত যত বাড়ে তত বাড়ে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি। এ যেন তাদেরই মুক্তাঞ্চল। অথচ রয়েছে একটা জলজ্যান্ত ফাঁড়ি। দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটারও নয়। রাস্তায় রাত জাগে পুলিশের টহলদারি গাড়ি। তবু রাতে ওই পথে প্রকাশ্যে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মারামারি, পথ আটকে তোলা আদায় সবই চলে পুলিশের নাকের ডগায়। এমনই অভিযোগ স্থানীয় মানুষজনের। অভিযোগের তির বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। বিষয়টি কানে আসতেই ওই পথে নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে চলেছে পুলিশ।
রাস্তাটি নিগমের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পিন্টু ঘোষ এ ব্যাপারে বলেন, ‘আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটত না। সম্প্রতি গভীর রাতে এধরনের ঘটনার কথা শোনা যাচ্ছে। এনিয়েই পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’ শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসিপি (সদর) তন্ময় সরকার বলেন, ‘এমন ঘটনা বন্ধ করতে ওই রাস্তার নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হচ্ছে।’
শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির মধ্যে বিবেকানন্দ রোড রাতে কতটা বদলায় সম্প্রতি খালপাড়া ফাঁড়িতে দায়ের হওয়া এক অভিযোগেই ছবিটা স্পষ্ট ধরা পড়েছে। সেই অভিযোগে জানানো হয়েছে, গত সোমবার ব্যান্ডপার্টির কাজ সেরে বিবেকানন্দ রোড দিয়ে রাত দুটো নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আশিক। শনি মন্দিরের কাছে পৌঁছাতেই বহিরাগত কিছু তরুণ তাঁকে ঘিরে ধরে টাকার দাবি করতে থাকে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে কাঠের বাটাম দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর স্ত্রী এব্যাপারে খালপাড়া ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকেই পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এটিই প্রথম ঘটনা নয়। ওই পথে দিনকয়েক আগেও গভীর রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই তরুণকে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। আক্রান্ত দুজন খালপাড়া ফাঁড়িতেই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সিসিটিভি’র ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে দুজনকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল। এ সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অভিযুক্তদের দাপাদাপি করতেও দেখা গিয়েছিল।
এ সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা আইনজীবী মণীশ বারি বলেন, ‘রাতে পুলিশ ভ্যানকে মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারপরেও কীভাবে রাস্তায় এমন ঘটনা ঘটছে সেটা বোঝা মুশকিল।’