অনুপ সাহা, ওদলাবাড়ি: সহায়সম্বলহীন এক হিন্দু পরিবারকে আশ্রয় দেওয়াই শুধু নয়, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মহিলার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়লেন ওদলাবাড়ি হিন্দি স্কুল কলোনির বাসিন্দা এক মুসলিম তরুণ মহম্মদ সাবলু।
বৃহস্পতিবার ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য মহম্মদ সাবলু বলেন, ‘মাস দুয়েক আগে বৃদ্ধা মা শশীবালা (৭০) ও সাত বছরের সন্তান রিংকু রায়কে নিয়ে চন্দনা রায় নামে এক মহিলা আমার কাছে সাহায্য চাইতে এসেছিলেন। পরে জানতে পেরেছি, আসলে জয়গাঁর বাসিন্দা ওই পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছিল। শেষে আমার কাছে আসে। কিডনির জটিল অসুখে ভুগছিলেন চন্দনা। মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবার পর কোনওমতে ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার টানছিলেন তিনি। আমিও সাধ্যমতো সাহায্য করছিলাম মাঝে মাঝে।’
তাঁর সংযোজন, ‘বুধবার বিকেলে চন্দনা মারা যান। ফোন নম্বর জোগাড় করে মৃত মহিলার আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা সকলেই মুখ ফিরিয়ে নেন। এদিকে অর্থাভাবে চন্দনার শেষকৃত্য কীভাবে করা হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন মৃতার মা। তাই পুলিশের অনুমতি নিয়ে আমি স্থানীয় তরুণ সুধীনের পাশাপাশি পাড়ার কয়েকজন মুসলিম তরুণকে নিয়ে হিন্দুমতে শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করি।’
এর আগেও হিন্দি স্কুল কলোনির এক অসহায় হিন্দু পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধের আয়োজন করিয়েছিলেন সাবলু। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন একাধিক হিন্দু মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানেও। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অস্বাভাবিক মনে হলেও নিজের কীর্তিকলাপ নিয়ে অকপট সাবলু।
তাঁর সাফ কথা, ‘জাতপাত ভুলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন মানুষ হিসেবে আমার কর্তব্য বলে মনে করি।’