চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার: নিউ কোচবিহার রেলস্টেশনের (New Cooch Behar Junction Railway Station) আধুনিকীকরণের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। প্রকল্পের ফাইল আটকে দিয়েছে রেলবোর্ড। সবমিলিয়ে প্রায় দেড়শো কোটি টাকায় এই স্টেশন বিশ্বমানের হয়ে ওঠার কথা। কিন্তু তার তো অনুমোদনই দেয়নি রেল। সেই সঙ্গে কোচবিহার রাজবাড়ির (Cooch Behar Palace) আদলে স্টেশন ভবন নির্মাণের কাজও হওয়ার কথা। সেটাও আটকে গেল। যদিও কী কারণে ফাইল আটকে গিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ছয় মাসেরও বেশি আগে এই প্রকল্পের ডিপিআর ও ম্যাপিং করে রেলবোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছিল। রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিভিশনাল কমার্সিয়াল ম্যানেজার (আইসি) অঙ্কিত গুপ্তা বলছেন, ‘যে ড্রাফট তৈরি হয়েছিল। সেই ফাইল রেলবোর্ডে আটকে রয়েছে। কাজটির অনুমোদন হয়নি। তবে রাজবাড়ির আদলেই কাজটি হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার জন্য বোর্ডে উপস্থাপনাও করা হয়।’
সূত্রের খবর, নিউ কোচবিহার রেলস্টেশনকে বিশ্বমানের গড়ে তুলতে কোচবিহার রাজপ্রাসাদ, মদনমোহনবাড়ি এবং একটি আধুনিক মডেলের আদলে নকশা রেলের কাছে জমা পড়েছিল। তারপর সেখান থেকে কোচবিহার রাজপ্রাসাদের আদল চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কারণ রাজবাড়ির আদলে এই স্টেশনের ভবন আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যদিও গত প্রায় এক দশক ধরে সেই কাজ অসমাপ্ত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
এসবই ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের কথা। সেই সময় নিউ কোচবিহার স্টেশনের কাজের চূড়ান্ত স্তরের অনুমোদনও চলে এসেছিল বলে জানিয়েছিল রেলই। এরপর আন্তর্জাতিক স্তরে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক পরামর্শদাতা এজেন্সিকে নিয়োগ করা হয়। তারা রেল আধিকারিকদের নিয়ে নিউ কোচবিহার স্টেশন ও এলাকা পরিদর্শন করে। এরপর স্টেশনের ডিজাইন তৈরির কাজ করা হয়।
রেল (Rail) জানিয়েছিল, যে ডিপিআর তৈরি হয়, তাতে দুটি পর্যায়ে কাজ হওয়ার কথা ছিল। প্রথম ধাপে এজেন্সির নকশা করা, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেন্ডার করা সহ যাবতীয় কাজ হওয়ার কথা ছিল। দ্বিতীয় ধাপে স্টেশনের মডেল অনুযায়ী কাজ করা, স্টেশনে একাধিক হল তৈরি, ফুড প্লাজা ও আধুনিক রেস্তোরাঁ তৈরির কথা ছিল। পার্কিং লট তৈরির কথাও ছিল। এতকিছু হওয়ার পরও কেন রেলবোর্ড ফাইল আটকে দিল, এতদিনেও অনুমোদন দিল না, তা নিয়ে রেল আধিকারিকরা কিছু বলতে পারছেন না।
২০২১ সালে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বিশ্বমানের রেলস্টেশন হচ্ছে নিউ কোচবিহার। এই স্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিদিন ৫০ জোড়ার বেশি ট্রেন চলাচল করে। রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের একমাত্র এই স্টেশনটিই বিশ্বমানের হওয়ার কথা ছিল। এর আগে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ি এবং গুয়াহাটি স্টেশনকে বিশ্বমানের স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।