শিলিগুড়ি: চম্পাসারির হোটেলে দেহব্যবসা কাণ্ডে হোটেল মালিক বিজয় জয়সওয়াল পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ রাজেশপ্রসাদ শা’র বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন বলে বিজয়ের পরিবার সূত্রে এমনই দাবি করা হল। অনেকসময় নিজের হোটেলকে ‘দাদার হোটেল’ হিসেবেই পরিচয় দিতেন ওই ব্যক্তি।এমনকি হোটেলে নিজের কেবিনে বড় করে সেই ‘দাদা’-র সঙ্গে ছবি রয়েছে বিজয়ের। তাঁর ভাইপো সুবোধ জয়সওয়াল বলছেন, ‘রাজেশপ্রসাদ শা’র সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে কাকার।’ রাজেশের যে কোনও অনুষ্ঠানই নাকি হত বিজয়ের হোটেলেই। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক? তা বলতে পারেননি সুবোধ।
এদিকে, গোটা বিষয়টা প্রকাশ্যে আসতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ। বিজয়ের সঙ্গে পরিচয় থাকার ব্যাপারটা স্বীকার করলেও রাজেশের দাবি, ‘ও আমার ভাই না, বন্ধুও না। আমার নাম বিক্রি করে কোনও কাজ করে থাকলে একদমই ভালো কাজ করেনি। পুলিশকে বলব এব্যাপারে তদন্ত করতে।তৃণমূল জেলা সভানেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন ওই হোটেলে আর কোনও বৈঠক না করতে। তাই আর কোনও বৈঠক হবেও না।’
যদিও ঘটনার পর তিনদিন কেটে গেলেও এখনও পুলিশের কাছে খোঁজ নেই বিজয়ের।বিজয়ের ভাইপো সুবোধ জানিয়েছে, ‘কাকা বাইরে চিকিৎসা করাতে গিয়েছে।’ যদিও কোথায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছে, সেব্যাপারে মুখ বন্ধই রেখেছেন সুবোধ। তবে বিজয়ের গা-ঢাকা দেওয়ার এই ঘটনা এবারেই প্রথম নয়। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেলিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। তখন বেশ কয়েকদিনের জন্য গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। এখনও তাঁর বিরুদ্ধে ওই মামলা চলছে।
অভিযোগকারী প্রদীপ বনসাল শহরের একটি মিষ্টির দোকানের ডিরেক্টর। চার বছর আগের ওই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই বছর দীপাবলির সময় বিজয় এসে প্রথমে সখ্য বাড়িয়েছিল। তারপর কিছুদিন পরেই আমার ম্যানেজারকে ফোন করে চম্পাসারি রোড সংলগ্ন এক জায়গায় ঢেকে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের মিষ্টির প্যাকেট দেখিয়ে তারমধ্যে পোকা দেখানোর অভিযোগ এনে এক কোটি টাকা চেয়ে বসে।’ প্রদীপের অভিযোগ, ‘টাকা দিতে রাজি না হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেলিং শুরু করে।’ পরবর্তীতে ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রদীপ। প্রদীপের অভিযোগ, ‘দেহব্যবসার পাশাপাশি ব্ল্যাকমেলিং করে বিজয় বহু মানুষের সর্বনাশ করেছে। ওর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’