শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি: লাটাগুড়ির (Lataguri) বহু রিসর্টে (Resort) নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। নেই ফায়ার লাইসেন্সও। ফলে বড় কোনও অগ্নিকাণ্ডের (Fire) ঘটনা ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা অনেক হবে বলে আশঙ্কা। শনিবার রাতে লাটাগুড়ির একটি রিসর্টের পরিত্যক্ত কটেজে অগ্নিকাণ্ডের পর পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ছোট-বড় মিলিয়ে লাটাগুড়ি ও আশপাশের এলাকায় রিসর্টের সংখ্যা সত্তরেরও বেশি। অভিযোগ, এর মধ্যে সিংহভাগ রিসর্ট কর্তৃপক্ষের কাছেই ফায়ার লাইসেন্স নেই। এমনকি, প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাটুকুও নেই বলে অভিযোগ।
লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব অবশ্য অন্য কথা বললেন। তাঁর দাবি, ‘লাটাগুড়ির বেশিরভাগ রিসর্টের ফায়ার লাইসেন্সের পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। কয়েকটি কটেজ, যেগুলো ছোট পরিসরে ব্যবসা করে, তাদের ফায়ার লাইসেন্স নাও থাকতে পারে।’ কিন্তু এতে তো পর্যটকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ফায়ার লাইসেন্স বের করার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। তাই তারা এখনও লাইসেন্স বের করে উঠতে পারেনি। তবে তারাও যাতে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখে, সেটা রিসর্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’
লাটাগুড়িতে মাঝেমধ্যে ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা লেগেই রয়েছে। শনিবার রাতে লাটাগুড়ির ওই বেসরকারি রিসর্টের পরিত্যক্ত কটেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কটেজটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। রিসর্টের কর্ণধার রতন শীল অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের রিসর্টের ফায়ার লাইসেন্স রয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছাই হয়ে যায় লাটাগুড়ির পূর্ত দপ্তরের আগের ইনস্পেকশন বাংলো। ঘটনায় একজন মারা যান। আর একজন গুরুতর আহত হন। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। উপযুক্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই রিসর্টগুলির ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে।
পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য তাই লাটাগুড়ির সমস্ত রিসর্টে ফায়ার লাইসেন্সের পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা চালু করার দাবি উঠেছে। রিসর্টগুলিকে লাইসেন্স দেওয়ার সময় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হবে বলে গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে খবর। লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কৃষ্ণা রায় বর্মন জানান, ইতিমধ্যে সমস্ত রিসর্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র গ্রাম পঞ্চায়েতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য অগ্নিনির্বাপণের কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘যাঁরা সঠিক নিয়ম মেনে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’