কিশনগঞ্জঃ বারসইয়ের ঘটনায় পুলিশ গুলি চালায়নি, গুলি চালিয়েছে এক দুষ্কৃতী। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে এমনই দাবি করল কাটিহার জেলাপ্রশাসন। জেলাপ্রশাসনের দাবি, পুলিশের গুলিতে কোন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়নি। ফুটেজে পরিস্কার ভাবে দেখা যাচ্ছে, গুলিবিদ্ধ সোনু ও খুরশীদকে ভিড়ের মধ্যে দুই দুষ্কৃতী খুব কাছ থেকে কপালে ও বুকে গুলি মেরেছে। আর অতি সহজে পালিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনার পরই বিক্ষোভ আন্দোলন আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে।
অনিয়মিত লোডশেডিং এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে বুধবার পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল এক বিক্ষোভকারীর। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও দুই বিদ্যুৎ গ্রাহক। ঘটনাটি ঘটে বিহারের কাটিহার জেলার বারসই এর ব্লক অফিসে। এদিন কয়েক’শ বিদ্যুৎ গ্রাহক অনিয়মিত লোডশেডিং এর প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন বারসই ব্লক অফিসে। সেখানে আগে থেকেই মোতায়েন ছিল বিরাট পুলিশ বাহিনী। সেই সময় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে প্রথমে পুলিশ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এরপরই বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা আরও উত্তেজিত হয়ে ব্লক অফিসে দেদারে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। সেই সময়ই জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আশায় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন তিন বিক্ষুব্ধ বিদ্যুৎ গ্রাহক। সেই গুলিতেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ১ বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ পুলিশের গুলিতেই প্রাণ গিয়েছে বিক্ষোভকারীর।
ঘটনার দিনই রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য জেলাশাসক রবি প্রকাশ ও পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র কুমারকে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার কাটিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে, দাবি করেছেন পুলিশের গুলিতে নয়, অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতীদের গুলিতে সেইদিন ঘটনাস্থলে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এদিন জেলা শাসক রবি প্রকাশ ও পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র কুমার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দুইটি সিসি টিভির ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে বলেন, ‘ফুটেজে পরিস্কার ভাবে দেখা যাচ্ছে, মৃত দুই যুবক সোনু ও খুরশীদকে ভিড়ের মধ্যে দুষ্কৃতীরা পয়েন্টে টু পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে কপালে ও বুকে গুলি মেরেছে। আর অতি সহজেই সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। এই ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দুই দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে যাচ্ছে। আর ঘটনাস্থলের থেকে একটু দূর থেকে দুইজনকে গুলি মেরে পালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার পরই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় বিক্ষোভ। আর সবাই প্রান বাঁচাতে পালাচ্ছে।