সজল দে, মেখলিগঞ্জ: নিশ্চয়যানের বকেয়া বিলের বিষয় নতুন নয়। তবে এই বিল না মেটানোর কারণে চরম সমস্যায় পড়েছেন মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের নিশ্চয়যান মালিক পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সজল চক্রবর্তী। একদিকে বিল পাচ্ছেন না, অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতায় অসহায় অবস্থা নিশ্চয়যান মালিক সজল চক্রবর্তীর।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, টাকার অভাবে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে পারেননি তিনি। গত রবিবার তাঁর বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তর। তাই বর্তমানে অন্ধকারকে সঙ্গী করে স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে দিন কাটছে তাঁর। বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় তাঁর দুই মেয়ে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া কৃতিজা চক্রবর্তী এবং প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া কৃত্তিকা চক্রবর্তী অন্যের বাড়িতে গিয়ে পড়াশোনা করছে।
মঙ্গলবার অন্ধকার ঘরে শুয়ে সজল জানান, তাঁর আগের বকেয়া প্রায় ছয় লক্ষ টাকা। এই টাকার জন্য তিনি দিনের পর দিন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ঘুরেও টাকা পাচ্ছেন না। তাঁর সংযোজন, লিভারের পাশাপাশি পায়ের সমস্যাতেও ভুগছেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য ঘনঘন হায়দরাবাদে যেতে হয়। চিকিৎসার খরচ মেটাতে অনেক ধারদেনা করে চলছেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত দুই মাস ধরে তিনি নিশ্চয়যানটি চালাতে না পেরে বাড়িতে ফেলে রেখেছেন।
তাঁর বক্তব্য, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, এরপর হয়তো তাঁদের না খেয়েই দিন কাটাতে হবে। অন্য নিশ্চয়যান মালিকদেরও বকেয়া আছে তা তিনি জানেন। কিন্তু আগে তিনিও বকেয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েননি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আর শারীরিক অসুস্থতায় তাঁর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাঁর বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখার আবেদন জানান তিনি।
এনিয়ে মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল সুপার ডাঃ তাপসকুমার দাসের মন্তব্য, সজলের অসুস্থতার কথা তিনি জানেন। তাই বকেয়া শোধের সময় সজলকেই বেশি পরিশোধ করা হয়। কিন্তু বেশ কিছু বিল তিনি সাবমিট না করায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। সজলের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার খবর পেয়েই তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু রাখার বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে সেই সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন।
এদিকে সুপার বিল সাবমিট নিয়ে যা বলেছেন তাঁর প্রত্যুত্তরে সজল জানান, নিয়মিত অ্যাকাউন্ট্যান্ট আসেন না। তিনি বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে গিয়েও তাঁর দেখা পাননি।