Saturday, December 9, 2023
Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গঅবৈধ নার্সিং সেন্টারে নাম জড়াল পদ্মশ্রীপ্রাপক করিমুলের

অবৈধ নার্সিং সেন্টারে নাম জড়াল পদ্মশ্রীপ্রাপক করিমুলের

কৌশিক দাস, ক্রান্তি : জলপাইগুড়ির অবৈধ নার্সিং সেন্টারে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা হানা দিতেই খুলে দেওয়া হল সংস্থার সমস্ত হোর্ডিং, ব্যানার। এদিকে ওই নার্সিং সেন্টারের সঙ্গে নাম জড়াল করিমুল হকের। ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গার ধলাবাড়িতে করিমুলের বাসভবন মানব সেবা সদনেও চলত ওই সংস্থার ফ্রি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার। জলপাইগুড়িতে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা অভিযান করতেই করিমুলের বাড়ি থেকেও খুলে ফেলা হয়েছে সংস্থার ব্যানার।

মাস ছয়েক আগে ধলাবাড়িতে শুরু হয়েছিল এই ট্রেনিং সেন্টার। প্রথম ব্যাচে স্থানীয় প্রায় ৭০ জন মেয়েকে নিয়ে ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং করিমুল। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন চলত ক্লাস। মাসখানেক আগে সেই ব্যাচের শংসাপত্র দেওয়া শুরু হয়েছিল। প্রথমে ফ্রি বলা হলেও ট্রেনিং সেন্টার শুরু হলেও ধীরে ধীরে মুখোশ খুলতে শুরু করে সংস্থাটি। ক্লাস শুরুর কিছুদিন পর পরিচয়পত্র ও ইউনিফর্মের জন্য পড়ুয়াপিছু হাজার টাকা করে নিয়েছিল সংস্থাটি। জলপাইগুড়ি থেকেই সংস্থার কর্মীরা এসে ক্লাস নিতেন।

অভিযোগ, নার্সিং শেখানোর জন্য ল্যাব বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিছুই ছিল না। এরপর ট্রেনিং শেষের পর সংস্থার তরফে শংসাপত্রের জন্য ২০-২৫ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়। টাকার জন্য নানারকমভাবে চাপ ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। টাকা দেওয়া হলে নার্সিংহোমে কাজের সুযোগের প্রলোভনও দেখানো হয়। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে বেশ কয়েকজন অর্থ দিয়ে বিপাকে পড়েন। তাঁরা এখন বুঝতে পারছেন না শংসাপত্রগুলো ভুয়ো কিনা।

টাকা দিয়ে সার্টিফিকেটের বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে ছিলেন বলে দাবি করিমুলের। করিমুল জানান, বিজ্ঞাপন দেখে প্রভাবিত হয়েই তিনি মানব সেবা সদনে সেন্টার করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ভুয়ো বা অবৈধ কি না, সে বিষয়ে তিনি খোঁজ নেননি।

করিমুল বলেন, ‘জলপাইগুড়ি শহরে সংস্থার বড় বড় ব্যানার দেখে আমি প্রভাবিত হয়েছিলাম। অনেক মেয়েকে সেখানে নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিতে দেখেছিলাম। জলপাইগুড়ি শহরের বুকে এতদিন ধরে একটা সেন্টার চলছে দেখে ভেবেছিলাম, আমার গ্রামেও যদি এরকম একটা বিনামূল্যে করা যায়। এতে এলাকার দুঃস্থ মেয়েরা নার্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারবে। কিন্তু ওই সংস্থা যে বেআইনিভাবে আর্থিক লেনদেন করবে সে বিষয়ে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারিনি।’

করিমুলের এই বক্তব্যের পরেও কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমোদন কিংবা প্রয়োজনীয় নথিপত্র আছে কি না, সেটা যাচাই কেন করা হয়নি। করিমুলের দাবি, ‘আমি বেশিদূর লেখাপড়া করিনি। শুধু ভালো কিছু করতে গিয়ে এই সমস্যায় পড়লাম।’ ট্রেনিং নিয়ে প্রতারিত হওয়া এক পড়ুয়া বলেন, বিনামূল্যে শেখানোর কথা শুনেই এসেছিলাম। পরে এদের অন্য উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সরে এসেছিলাম। হাতেকলমে শেখানোর কোনও ব্যবস্থা এখানে ছিল না। টাকা দিয়ে প্রতারিত এক শিক্ষার্থী বলেন, সার্টিফিকেট থাকলে ভালো হাসপাতালে চাকরি পাওয়া যাবে এবং চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে শুনে টাকা দিয়েছিলাম। বুঝতে পারছি না এখন এই সার্টিফিকেট ভুয়ো কি না।

বিষয়টি নিয়ে অনুতপ্ত করিমুল নিজেও। আরেকটু সতর্ক হয়ে কাজ করলে এমনটা ঘটত না বলেই আক্ষেপ তাঁর। দ্রুত বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

Sourav Roy
Sourav Royhttps://uttarbangasambad.com
Sourav Roy working as a Journalist since 2013. He already worked in many leading media houses in this few years. Sourav presently working in Uttarbanga Sambad as a Journalist & Sud Editor of Digital Desk from March 2019 in Siliguri, West Bengal.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments