ওল্ড মালদাঃ তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ও উপ প্রধানের দ্বন্দে থমকে এলাকার উন্নয়ন। তৃণমূল পরিচালিত ওল্ড মালদা ব্লকের অন্তর্গত মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান উপপ্রধানের সংঘাতে সমস্যার মধ্যে সাধারন মানুষ। এই গ্রাম পঞ্চায়েতে মানুষের অনেক সমস্যা। কিন্তু নেই সমাধান। স্থানীয়দের অভিযোগ পঞ্চায়েত কে বারবার বললেও কোন সুরাহা হয়নি। ভোটের সময় মিলেছে একাধিক প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বাস্তবে হয়নি কোন উন্নয়নের কাজ। প্রধানের অভিযোগ, উপপ্রধানের অসহযোগিতায় উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
তৃণমূল পরিচালিত ওল্ড মালদা ব্লকের অন্তর্গত মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতে সব থেকে বড় সমস্যা এলাকার রাস্তা নিয়ে। বলরামপুরের খনিবাথান এলাকায় বহু বছর আগে লাল মাটি দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হয়েছিল। সংস্কারের অভাবে বেহাল দশা সেই রাস্তার। যানবাহন চলাচলের পক্ষে অযোগ্য। বর্ষার সময় পায়ে হেঁটেও চলা দায় এই রাস্তা দিয়ে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। উল্টে যাচ্ছে বাইক বা টোটো। স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি মন্ডল জানান, “আজকেই একটা টোটো উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাস্তার জন্য খুব সমস্যা হচ্ছে আমাদের। আমাদের দাবি বর্ষা আসার আগে দ্রুত রাস্তার কাজ হোক।”
এছাড়াও মহিষবাথানি থেকে আট মাইল যাওয়ার রাস্তার অবস্থা বেহাল।শুধু রাস্তায় নয় সরকারি পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত এলাকাবাসী। কাঁচা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই এখনও পায়নি আবাস যোজনার ঘর। আবেদন করার পরেও এলাকার বহু প্রবীণ ব্যক্তি বঞ্চিত রয়েছে বার্ধক্য ভাতা থেকে। স্থানীয় বাসিন্দা কৈলাস চৌধুরীর অভিযোগ, “ভোট মিটে গেলে আমাদের আর কেউ দেখতে আসে না। সমস্যা অনেক রয়েছে। বারবার অভিযোগ জানালেও সমাধান হয়নি।”
এলাকায় কাজ হয়নি সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহিষবাথানি পঞ্চায়েতের প্রধান রুকসানা খাতুন। যদিও এর জন্য তিনি দায়ী করছেন উপপ্রধান মহম্মদ সরাফাত আলীকে। রুকসানা খাতুনের অভিযোগ, “উপপ্রধান তৃণমূলের দুইজন সদস্য এবং কংগ্রেস ও সিপিআইএমের আরও দুই সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে চক্রান্ত করে পঞ্চায়েতের কাজ হতে দিচ্ছে না। কোন কাজ করতে গেলে কাউকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে কাজ আটকে দিচ্ছে। আমি দুর্নীতি বরদাস্ত করব না। তাই এই ষড়যন্ত্র করছে উপপ্রধান। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কে বারবার জানিয়েছে কিন্তু সুরাহা হয়নি।”
যদিও উপপ্রধান মহম্মদ সরাফত আলীর পাল্টা দাবি,”প্রধান নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে আমার দিকে দোষ দিচ্ছে। উনি কাজ করতে ব্যর্থ। আগের প্রধানকে দুর্নীতির জন্য আমরা সরিয়েছিলাম। কিন্তু এই প্রধান ও একই।”
ওল্ড মালদার বিজেপি বিধায়ক গোপাল চন্দ্র সাহার কটাক্ষ,”নিজেদের মধ্যে তৃণমূলের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে সমস্যা। যার ফলে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। এসব বেশিদিন চলবে না।”
প্রসঙ্গত ১৮ টি আসনের মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৪ টি রয়েছে শাসকদলের দখলে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন রোজিনা খাতুন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনে তৃণমূলের সদস্যরায়। তারপর প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রুকসানা খাতুন। কিন্তু প্রধান বদল হলেও বদলায়নি চিত্র। সমস্যার মধ্যেই থেকে গেছে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ।