রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের (Tourist) আকর্ষিত করতে সাত বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় দার্জিলিংয়ে চালু হল প্যারাগ্লাইডিং (Darjeeling Paragliding)। এবার কার্সিয়াংয়েও (Kalimpong) এই পরিষেবা আনতে চাইছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA)। গিদ্দাপাহাড় থেকে রোহিণী পর্যন্ত যা চালু হতে পারে। দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) ফের প্যারাগ্লাইডিং চালু হওয়ায় পর্যটন মহলে খুশির হাওয়া।
২০১১ সালে শৈলশহরে প্যারাগ্লাইডিং (Paragliding) পরিষেবা চালু হয়। কয়েক বছরের মধ্যে সেটা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে ২০১৭ সালে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে ফের হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় প্যারাগ্লাইডিং। কালিম্পংয়ের ডেলোয় এই রোমাঞ্চকর কার্যকলাপ পর্যটকদের ভিড়ের অন্যতম কারণ। অবশ্য সেখানে ২০১৮ সালে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক পর্যটকের। তারপর কিছুদিন এই পরিষেবা বন্ধ করেছিল জিটিএ। পরবর্তীতে বাছাই করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকজনকে নিয়ে ফের চালু করার অনুমতি দেয় জিটিএ’র পর্যটন বিভাগ।
দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস থেকে লেবং পর্যন্ত শূন্যে আড়াই কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করতে পর্যটকদের খরচ পড়ছে ৩৫০০ টাকা। আগাম বুকিং করে তবেই প্যারাগ্লাইডিংয়ের আনন্দ নেওয়ার সুযোগ মিলছে। দার্জিলিংয়ের প্যারাগ্লাইডিংয়ের অন্যতম পরিচালক কর্মা শেরপা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুজন গ্লাইডার এবং দুজন পাইলট প্যারাগ্লাইডিং পরিচালনা করছেন। রোজ ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত এই পরিষেবা চালু থাকছে। কারণ, সকাল ১০টার পরে পশ্চিমী হাওয়া বইতে শুরু করায় প্যারাগ্লাইডিং করা সম্ভব হয় না।
রোজ মাত্র ছয়জন পর্যটক এই সুযোগ পাবেন। প্যারাগ্লাইডিংয়ের সময় পর্যটকদের কাছে আরও সুন্দরভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ থাকছে। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের আনন্দ নিতে পর্যটকদের ৫০০ টাকা দিয়ে আগাম বুকিং করতে হবে। বাকি টাকা দিতে হবে প্যারাগ্লাইডিংয়ের সময়। হোটেল থেকে পর্যটককে তুলে সেন্ট পলসে নিয়ে যাওয়া এবং লেবংয়ে নামার পর সেখান থেকে গাড়িতে পর্যটককে হোটেলে পৌঁছে দেওয়া হবে। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে প্যারাগ্লাইডিং করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হবে পর্যটককে।
কর্মা বলেন, ‘আমরা পর্যটকদের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকে ফোন করে স্লট বুকিং সহ অন্যান্য খোঁজখবর করছেন। কিন্তু আপাতত রোজ আমরা মাত্র ছয়জনকে পরিষেবা দিতে পারছি। জিটিএ চাইলে পরবর্তীতে এই সংখ্যা বাড়তে পারে।’
জিটিএর অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম বিভাগের মুখ্য আহ্বায়ক দাওয়া শেরপার বক্তব্য, ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে উৎসাহ দিতেই জিটিএ এই পরিষেবা চালু করেছে। শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড অ্যাডভেঞ্চার সংস্থাগুলোকেই পরিষেবা দেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কালিম্পং, দার্জিলিংয়ের পর এবার কার্সিয়াংয়েও প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা চালু করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কোন জায়গা থেকে শুরু হবে, কোথায় গিয়ে নামবে সহ বিভিন্ন বিষয়ে ইতিমধ্যে সমীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, গিদ্দাপাহাড় থেকে শুরু হয়ে রোহিণীতে গিয়ে নামানো হবে।’ খুব তাড়াতাড়ি এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।