সানি সরকার, শিলিগুড়ি: নীল-সাদা রংয়ের পরিবর্তন ঘটেছে। পথসাথীর (Pathasathi) নামেরও বদল ঘটেছে। পরিস্থিতির পরিবর্তনে এখন সর্বত্রই ঝাঁ চকচকে। বেসরকারি হাতে যাওয়ার পরেই যে এমন ভোলবদল, তা স্পষ্ট জলপাইগুড়ি জেলার ফুলবাড়ি (Fulbari) এবং দার্জিলিং জেলার শিমূলবাড়ির সাবেক পথসাথীতে।
পর্যটনের প্রসারের লক্ষ্যেই বেসরকারি সংস্থার হাতে পথসাথীগুলিকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে পর্যটকরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই পর্যটন দপ্তরের আয় বৃদ্ধি ঘটবে বলে প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করছেন। পর্যটন দপ্তরের এক কর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে বেড়াতে আসা পর্যটকরা অনেক সময়ই ট্রেন বা বিমান লেটের জন্য সমস্যায় পড়েন। স্থানীয় এলাকায় বেড়াতে ইচ্ছুক পর্যটকদের রাত্রিবাসের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হয়। তাই পরিকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থাগুলির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সাতটি পথসাথী বেসরকারি সংস্থাকে পরিচালনার জন্য দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলির প্রক্রিয়া চলছে।
পথিকের কষ্ট লাঘবের জন্য জেলায় জেলায় পথের ধারে পথসাথী গড়ে তোলার কথা ২০১৮ সালে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আবাসন প্রকল্পে এখন পর্যন্ত রাজ্যে ৭০টি পথসাথী গড়ে তোলা হয়েছে। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গে রয়েছে ১৬টি। কিন্তু বাস্তবে সেভাবে সাফল্যের মুখ দেখেনি কোনও পথসাথী। এর মূলেই রয়েছে পরিকাঠামোগত অনুন্নয়ন। যার জেরে পথসাথীগুলিকে পর্যটন দপ্তরের হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার। পর্যটন দপ্তরও পথসাথীগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন করতে এবং সেগুলিকে আধুনিক করে তুলতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় পর্যটন দপ্তর।
পর্যটন দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘বর্তমান সময়ে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দেন। আর এই ক্ষেত্রে নজর দিয়েই বেসরকারি সংস্থাগুলির সাহায্য নেওয়া।’ শিমূলবাড়ি, লাটাগুড়ি, চালসার মতো বেশ কয়েকটি পথসাথীতে পা পড়ছে পর্যটকদের। দার্জিলিং পাহাড়ের সীমানা এবং সিপাইদুরার পথসাথীর আধুনিকীরণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
পর্যটন দপ্তরের এই সিদ্ধান্তে খুশি পর্যটন মহল। পর্যটন ব্যবসায়ী পার্থ গুহ বলছেন, ‘পথসাথীগুলির লোকেশন অসাধারণ। এমন কিছু পথসাথী রয়েছে, যেখানে থাকার অন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। পরিষেবার ক্ষেত্রে যদি বিশেষ নজর দেওয়া হয়, তবে পর্যটকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় চলে আসতে পারে পথসাথী।’ পরিষেবা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন সাধন রায়ের মতো অনেক পর্যটন ব্যবসায়ী।