শিলিগুড়ি: মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে শহর শিলিগুড়িতে (Siliguri)। ব্যস্ততা বেড়েছে পুলিশ-প্রশাসনেরও। আর সেই ফাঁকেই বাড়ছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। কখনও অলিগলিতে, কখনও প্রধান রাস্তায় মাঝেমধ্যেই ছিনতাইয়ের ঘটনা আতঙ্ক বাড়ছে শহরবাসীর।
নির্বাচনি আচরণবিধি জারি হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দশটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মোবাইলের পাশাপাশি খোয়া গিয়েছে সোনার হারও। যদিও নিয়মিত পুলিশি নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ডিসিপি (হেড কোর্য়াটার) তন্ময় সরকার। পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরের বক্তব্য, ‘আমরা এধরনের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেব।’
শহর শিলিগুড়িতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পুলিশ মহলে ব্যস্ততার শেষ নেই। একদিকে দার্জিলিং লোকসভা এলাকায় নির্বাচন, অন্যদিকে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ভোট পরবর্তী ঝামেলা সামাল দিতে কালঘাম ছুটছে পুলিশের। ঠিক এই পরিস্থিতিকেই কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতী। গত ১৮ তারিখ অর্থাৎ জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের ঠিক আগের দিন ওই লোকসভারই অন্তর্গত পুরনিগমের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ডন বসকো রোডে একটি ফ্ল্যাটের সামনেই ভরসন্ধ্যায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ভক্তিনগর থানায় অভিযোগকারী ওই ফ্ল্যাটেরই বাসিন্দা নিখিল আগরওয়াল জানিয়েছেন, তাঁর মা ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় মুদিখানা দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি যখন ফ্ল্যাটের সামনে চলে আসেন, ঠিক সেসময় বাইকে দুইজন এসে গলার হার টেনে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চলতি মাসে স্টেশন ফিডার রোডেও একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে অবশ্য গলার চেন নয়, এক তরুণীর হাতে থাকা মোবাইল বাইকে করে একই পদ্ধতিতে ছিনতাই করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এমনকি ছিনতাইকারীদের কবল থেকে বাদ যাননি খোদ ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার অনীতা মাহাতোও। গত সপ্তাহে তিনি রাতের দিকে ওয়ার্ড অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। সেসময় পেছন থেকে বাইকে করে দুই ছিনতাইকারী আসে। অনীতার কাঁধে থাকা ব্যাগ ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে সে যাত্রায় অবশ্যই দুষ্কৃতীরা ব্যর্থ হয়। যদিও জংশন এলাকায় দিনের আলোতেই ছিনতাইয়ের মুখোমুখি পড়েছিলেন এই মহিলা। চলতি মাসের শুরুতেই এই ঘটনা ঘটে। টার্মিনাসে ঢোকার সময়ই তাঁর মোবাইল ছিনতাই হয়।
মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়েছে চম্পাসারি মোড়, দশরথপল্লিতেও। শহরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস বলছেন, ‘নির্বাচনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব নিরাপত্তার ব্যাপার সুনিশ্চিত করা। তা না হলে বাইরে বেরোনোই তো এবারে মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।’