মুর্শিদাবাদ: ভোট মিটতেই নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় (Post poll violence) রক্তাক্ত মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলা। রানিতলা এবং ইসলামপুর থানা এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। জখমদের মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিপিআইএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘গতকাল মুর্শিদাবাদ জেলায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ এবং রক্তপাতবিহীনভাবেই নির্বাচন শেষ হয়েছে। এই নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত জানার পরই বুধবার সকাল থেকে তারা মারমুখি হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘রানিতলা থানার হোসনাবাদ এলাকায় গতকাল রাজীব শেখ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা বামেদের হয়ে ভোট করেছিল এবং নির্বাচনি কাজকর্ম পরিচালনা করেছিল। সেই আক্রোশ থেকে এদিন সকালে ওই এলাকার তৃণমূল নেতা আসগর শেখ, আপেল শেখ, কামিরুল শেখের নেতৃত্বে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী রাজীবের বাড়িতে ছররা গুলি চালায়। এই ঘটনায় রাজীব শেখ ছাড়াও তাঁর পরিবারের তিন নাবালক সদস্যের গায়ে ছররা গুলির আঘাত লাগে।’ রক্তাক্ত অবস্থায় রাজীব পড়ে গেলে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মহিম শেখ এবং আরও একজন ব্যক্তি তাঁদের উদ্ধার করতে যান। সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই দুই ব্যক্তিকে মারধর করে তাঁদের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তারাও বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে (Murshidabad Medical College And Hospital) ভর্তি রয়েছেন। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছে এলাকা থেকে কেন্দ্রীয়বাহিনী চলে গেলে কেউ তাঁদেরকে রক্ষা করতে পারবে না।
অন্যদিকে, গতকাল ভোট শেষের পর রানিতলা থানার ডিহিপাড়া গ্রামে বাবলু শেখ নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বাম-কংগ্রেস জোট সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তবে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অভিযোগ, গতকাল রাত ১১টার পর বাবলুর বাড়িতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হয়েছে সফি শেখ এবং আরজান শেখ নামে পরিবারের আরও দুই সদস্য। জখমরা বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
যদিও রানিতলার গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন ভগবানগোলা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় একটি নর্দমা তৈরি করা নিয়ে আজ সকালে দুটি পরিবারের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। সেই সময় এক পক্ষ গুলি চালিয়েছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’ পুলিশ জানিয়েছে, রানিতলা থানা এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।