কিশনগঞ্জঃ ১১৯ বছরে পড়ল কিশনগঞ্জের বুড়ি কালী বাড়ীর পুজো। ১৯০২ সালে ঘোর জঙ্গলে টিনের একচালা মন্দিরে এই পুজো শুরু হয়। সারাবছর ধরেই এই মন্দিরে পুজো হয় মা দক্ষিণা কালীর। কিশনগঞ্জবাসীর আস্তা ও বিশ্বাসের প্রতীক এই কালী বাড়ী। স্থানীয় প্রবীন নাগরিকদের বিশ্বাস, মা দক্ষিণা কালীর এই মন্দির খুবই জাগ্রত। এই পুজোয় ভক্তরা কালী মায়ের প্রতিমা দিলে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০৪৮ সাল পর্যন্ত ভক্তদের মানত করা প্রতিমা দিয়ে রেখেছে কালীমন্দিরে। কালীবাড়ির মৃন্ময়ী প্রতিমা মন্দির কমিটির রেজিস্টারে দাতাদের নাম ক্রমানুসারে লেখা আছে। কোনও ভক্তের মনোকামণা পূরণ হলে এই মন্দিরের মৃণ্ময়ী মূর্তিকে সোনা-রুপোর বিবিধ অলঙ্কার দিয়ে মাকে সাজিয়ে দেন। এই মন্দিরে পাঠা, কবুতর, আখ, জাম্বুরা, চাল কুমড়ো বলি দেওয়ার প্রথা রয়েছে। প্রতিবছর এই কার্তিকী অমানিশার পুজোর পরে, পঞ্চাশের বেশী পাঠার রক্তে মন্দির চত্বর স্নাত হয়। অনেকে দেবীকে উৎসর্গ করার পর ধর্মের নামে পাঠাকে মুক্ত করে দেয়।
একসময়ের মাটির ঢিপি ও টিনের একচালার মন্দির বর্তমানে ভক্তদের দানে বিশাল মন্দিরে পরিণত হয়েছে। এই মন্দিরে নিত্য পুজো, প্রতিমাসের অমাবস্যার পুজো ও বিশেষ বিশেষ দিনে পুজো হয়। এছাড়া কার্তিকী অমানিশার পুজোর রাতে স্থানীয় ও দুরদুরান্তের ভক্তদের জমায়েত হয়।
উল্লেখ্য প্রতিবছর কার্তিকী অমানিশার আগের দিন স্থানীয় ডক নদীতে মৃন্ময়ী প্রতিমার ধর্মীয় রীতি মেনে বিসর্জন দেওয়া হয়। কোন অজানা কারনে বুড়ি কালী বাড়িতে কস্টি পাথরের প্রতিমার প্রাণ প্রতিষ্ঠা বাধা পায়। আর সেইজন্য এই কালী বাড়িতে সারাবছর মৃন্ময়ী প্রতিমার পুজো হয়। সূত্র জানিয়েছে বংশ পরম্পরায় স্থানীয় মৃৎশিল্পী মলয় মুখার্জি মন্দিরের পুরোহিত নিমাই পাল মৃন্ময়ী মূর্তি গড়ে চলেছেন।