বালুরঘাটঃ বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ঘুষের। দিয়েছিলেন প্রশাসনের এক অস্থায়ী কর্মী। ঘুষের অঙ্ক ছিল ৫৫ হাজার টাকা।। সেই খবর ফাঁস হওয়ায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। একটি কমিটি জেলা প্রশাসনের, দ্বিতীয়টি বালুরঘাট থানার। অভিযোগের পরে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। অথচ তদন্তে তেমন কোনও অগ্রগতি নেই। যে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাঁর টিকি পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি কোনও তদন্ত কমিটি। ইতিমধ্যে কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে ওই প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকে গিয়েছে। তারাও চাইছে, ঘুষকাণ্ডের তদন্ত হোক। যে দিয়েছিলেন ঘুষের প্রস্তাব, প্রশাসন অবিলম্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করুক।
বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের জন্য জমি দিয়েছিলেন নেপাল সরকার এবং তাঁর দাদা। ক্ষতিপূরণ বাবদ তারা পেয়েছেন ১৫ লক্ষ টাকা। টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেও গিয়েছে। আরও এক জমিদাতার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। নেপাল সরকার বলেন, ‘বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের জন্য আমরা জমি দিয়েছিলাম। তাঁর বিনিময়ে আমাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারের তরফ থেকে দেওয়ার কথা ছিল ১৫ লক্ষ টাকা। টাকা আমাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে। আরও এক জমিদাতাও টাকা পেয়েছেন। অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তদন্ত একচুলও এগোয়নি। আমরা ওই অস্থায়ী সরকারি কর্মীর শাস্তি চাই।’
অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি ও রাজস্ব) হারিশ রসিদ বলেন, ‘কাগজপত্র খতিয়ে দেখে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। অনেকেই টাকা পেয়ে গিয়েছেন। বাকিরাও পাবেন। ঘুষের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন দুই তরফেই তদন্ত চলছে। এই নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। একই আশ্বাস দিয়েছেন বালুরঘাট ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) বিক্রম প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘এনিয়ে তদন্ত চলছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।
প্রসঙ্গত, হিলি রেল প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই জমিদাতাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে। তবে এখনও অনেকের জমির কাগজ ও নানা নথি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য টাকা দেরিতে ঢুকছে। তাই প্রতিদিনই হিলি ও বালুরঘাটে জমি দাতারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এই সুযোগেই জেলায় দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে দেওয়ার নামে ফোনে ৫৫ হাজার টাকার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠছে ভূমিসংস্কার দপ্তরের এক দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাওয়ার পরে জেলা প্রশাসন ও বালুরঘাট থানা পৃথকভাবে তদন্তকমিটি গঠন করে। জমিদাতাদের অভিযোগ, তদন্তে গতি নেই। তাই, অভিযুক্ত এখনও অধরা।
