নয়াদিল্লী : ১৩৬ দিন পার করে এদিন আবারও লোকসভায় ফিরলেন রাহুল গান্ধী৷ মোদী পদবী সংক্রান্ত মানহানির মামলায় সুরাট আদালতের দেওয়া রায় এবং সাজার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট গত শুক্রবার৷ তার ৭২ ঘন্টা পরে সোমবার সকালে লোকসভার সচিবালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাহুল গান্ধীর লোকসভা সাংসদ পদ ফেরানো হল৷ এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দু ঘন্টার মধ্যেই সোমবার লোকসভা পা রাখেন রাহুল গান্ধী।
রাহুলের প্রত্যাবর্তনে হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি শাসক শিবির৷ পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার রাহুল গান্ধী লোকসভায় ফেরা মাত্রই স্পিকার প্যানেল কিরিটভাই সোলাঙ্কির নির্দেশে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে প্রায় সাথে সাথে রাহুলের বিরুদ্ধে মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত চিনা অনুদান প্রসঙ্গে প্রবল তোপ দাগা আরম্ভ করেন। তাঁর সেই পাল্লা দেন শাসক দলীয় অন্য সাংসদরাও৷ লোকসভায় রব ওঠে, ‘রাহুল গান্ধী গো ব্যাক’, ‘রাহুল গান্ধী শেম শেম’। পালটা সরব হন বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। নিশিকান্ত দুবের মতে, “দেশে অস্থিরতা ছড়াতে কংগ্রেসকে ইন্ধন দিচ্ছে চিন। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ অসাধু কার্যাকলাপের জন্য এই টাকা দেওয়া হয়।” সাথে সাথে উত্তাল হয় ট্রেজারি বেঞ্চ। স্লোগান ওঠে, “রাহুল গান্ধী শেম শেম”। পালটা প্রতিবাদে সরব হন কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। প্রবল হইহট্টগোল সভার কাজ মুলতুবি রাখেন স্পিকার প্যানেল সদস্য কিরিট সোলাঙ্কি। পরে, নিশিকান্ত দুবের বক্তব্যের বিরোধীতায় সোচ্চার হন কংগ্রেসের লোকসভা দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সংসদীয় রুল ৩৫৩ অনুযায়ী ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ উত্থাপিত করে তিনি বলেন, “কোনও তথ্যপ্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও অনৈতিক ভাবে রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। অবিলম্বে তাঁর মন্তব্য লোকসভা রেকর্ড থেকে সরিয়ে ফেলা হোক।” কিন্তু অধীরের মাইক বন্ধ করে দেন স্পিকার প্যানেল কিরিটভাই সোলাঙ্কি। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে সভা থেকে ওয়াক আউট করার সিদ্ধান্ত নেয় বিরোধী শিবির।
এর পরেও অবশ্য বেশ কিছুটা সময় সংসদে কাটান রাহুল। দীর্ঘদিন বাদে উপস্থিত হন সেন্ট্রাল হলে, খোশগল্পে মেতে ওঠেন দলীয় সাংসদদের সঙ্গে। রাহুল হাজির হন কংগ্রেসের সংসদীয় কার্যালয়েও। আলাদা করে বৈঠক করেন মল্লিকার্জুন খড়গে সহ অন্যান্য কংগ্রেসী সাংসদদের সঙ্গে। পরে সংসদ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। আগামীকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন রাহুল। অধীর চৌধুরীর দাবি, “আমরা চাই অমিত শাহের সামনে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে রাহুলই বিরোধী দলের তরফে প্রথম সোচ্চার হন।”