পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: দেশীয় প্রযুক্তি ‘কবচ’-এর প্রয়োগে ট্রেন দুর্ঘটনা কমাতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল (Northeast frontier railway) জোর তৎপরতা শুরু করেছে। এই প্রযুক্তিতে চালক ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুর্ঘটনা এড়াতে না পারলেও ট্রেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেমে যাবে। রেলের (Railway) নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে উত্তর- পূর্ব সীমান্ত রেল থেকে এই প্রযুক্তি রূপায়ণে জোরকদমে বেশ কয়েক মাস ধরেই কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, হালফিল সময়ে উত্তরবঙ্গে ছোট-বড় কোনও ট্রেন দুর্ঘটনার নজির নেই। দু’বছর আগে দোমোহনির কাছে দুরন্তগতিতে ছুটে চলা বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল। তাতে আটজন রেলযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় জখম হন প্রায় শতাধিক।
অন্যদিকে গত বছর অগাস্ট মাসে ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মা সহ সদ্যোজাত হাতির মৃত্যু হয়েছিল। এর বাইরে নতুন করে ট্রেন দুর্ঘটনার কোনও খবর নেই।
এদিকে রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে মানোন্নয়ন করতে নেমে পড়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। রেলের উদ্যোগে রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন এই দেশীয় প্রযুক্তি ‘কবচ’ রূপায়ণ করার কাজ শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে’র বক্তব্য, ‘যদি ট্রেনচালক ট্রেন দুর্ঘটনা এড়াতে নিজেই ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যর্থ হন তখন দুর্ঘটনা আসন্ন, যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই বিভিন্ন সংকেত বার্তা দিয়ে স্বয়ংক্রিয় ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবস্থায় কবচ প্রযুক্তি প্রয়োগে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।’
শুধু তাই নয়, একাধিক ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ প্রতিরোধ করা যাবে। এমনকি এই দেশীয় প্রযুক্তি আগামী কয়েক দশকেও সমানভাবে কার্যকরী থাকবে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অধীন মালদা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত আটটি জেলা, দার্জিলিং পাহাড় পর্যন্ত এই কবচ দেশীয় প্রযুক্তি দ্রুততার সঙ্গে রূপায়িত হতে চলেছ। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল তাদের বিভাগে ১৯৬৬ কিমি রেলপথকে কবচ প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে।