শিলিগুড়ি: মুখবন্ধ খামে কাদের নাম রয়েছে, জানেন না কেউ। তাই কার পক্ষে ভোট দিতে হবে, অজানা বিজেপি বিধায়কদের। মঙ্গলবার খামের মুখ খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, বাজেট অধিবেশন এবং রাজ্যসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিয়ে ওই দিন রয়েছে বিজেপির বৈঠক। তবে তার আগে রাজ্য বিজেপিতে উত্তর এবং দক্ষিণের ‘লড়াই’ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভিত যখন শক্ত, তখন উত্তরবঙ্গকে গুরুত্ব দিয়ে এখান থেকে প্রার্থী করার দাবিদার উত্তরবঙ্গের একাধিক বিধায়ক। তবে বারবার উত্তরের শিকে ছিঁড়বে, মানতে নারাজ দক্ষিণের বিধায়করা। সাংসদ এবং বিধায়কের সংখ্যা তাঁদের ঝুলিতে বেশি- এই তত্ত্ব খাড়া করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে কৌশলগত কারণে রাজ্য নেতৃত্ব সামনে নিয়ে আসছে ‘কেন্দ্রের পছন্দ’-র বিষয়টি।
নগেন রায়ের (অনন্ত) প্রার্থী হওয়ার সময় তিনি ছিলেন ‘ডামি’। নথিতে কোনও ত্রুটি ধরা না পড়ায় অনায়াসেই রাজ্যসভায় পা রাখেন কোচবিহারের নগেন। রথীন্দ্র বসুর ভাগ্যের চাকা আর ঘোরেনি। দলীয় সূত্রে খবর, পরবর্তীতে তাঁর নাম বিবেচনার মধ্যে রাখা হবে, এই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল রথীন্দ্রকে। তাহলে কি মুখবন্ধ খামে যে চারজনের নাম রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন রথীন্দ্র? জানতে চাইছেন মূলত উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক এবং দলের অনেক নেতা।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনও ধারণা নেই বলে দাবি রথীন্দ্রর। তিনি বলছেন, ‘রাজ্যসভার প্রার্থীপদ নিয়ে আমার সঙ্গে দলের তেমন কেউ কোনও আলোচনা করেননি। ফলে কে প্রার্থী হবেন বা কাদের নাম রয়েছে প্রার্থীতালিকায়, তা নিয়ে আমার কোনও ধারণা নেই।’ দল যে দায়িত্ব দেবে, দলের একজন কর্মী হিসেবে সেটা পালন করবেন বলে জানাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি।
এদিকে তাঁর কোনও ধারণা না থাকলেও বিজেপির অনেক বিধায়ক মনে করেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে রথীন্দ্রর রাজ্যসভায় যাওয়া উচিত। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বললেন, ‘কার নাম রয়েছে আমার অন্তত জানা নেই। মনে হয় না দলের অন্য বিধায়করা জানেন। তবে রথীনদার নাম থাকলে অবাক হব না। কেননা, এর আগে তাঁকে ডামি প্রার্থী করা হয়েছিল।’ যাঁকেই রাজ্যসভায় পাঠানো হোক, তিনি যাতে উত্তরবঙ্গের হন, সেদিকটা দলের দেখা উচিত বলে মনে করছেন এখানকার নেতা থেকে জনপ্রতিনিধিরা।
তবে যেহেতু নগেন রায় উত্তরবঙ্গের, তাই এবার জায়গা ছাড়তে নারাজ দক্ষিণবঙ্গের পদ্ম নেতারা। সেখানকার অনেক বিধায়কের বক্তব্য, ‘শক্ত ভিত বলে বারবার উত্তরবঙ্গকে গুরুত্ব দেওয়া হলে, সেটার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে দলীয় সংগঠনের ক্ষেত্রে।’ বিষয়টি দক্ষিণবঙ্গের কয়েকজন বিধায়ক রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে জানতে চাইলে উত্তর-দক্ষিণের লড়াই মানতে চাননি বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। তিনি বলছেন, ‘আঞ্চলিকতায় বিশ্বাসী নয় বিজেপি। যোগ্যতার নিরিখে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় দলের প্রতিনিধি পাঠানো হবে। কয়েকদিনের মধ্যে সমস্ত কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যসভা নির্বাচনের মনোনয়নের শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি।