রতুয়াঃ জয়েন্ট বিডিও দুর্নীতিগ্রস্ত! মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানালেন সভাপতি। ঘটনাটি রতুয়া ২ ব্লকের। এই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ব্লক অফিসের কর্মীরা। সভাপতির করা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার পেন ডাউন রেখে ধর্না, বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করলেন ব্লকের সমস্ত কর্মচারীরা। ফলে এদিন একপ্রকার বন্ধই ছিল অফিসের কাজকর্ম।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি ইমেল পান রতুয়া ২ ব্লকের বিডিও শেখর শেরপা। সেই ইমেল থেকে তিনি জানতে পারেন জয়েন্ট বিডিও কল্যাণ আশিস দাসের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরউদ্দিন। আগামী সাত দিনের মধ্যে অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি জানাজানি হতেই সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ব্লক অফিসের কর্মীরা। তাঁরা অবিলম্বে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য সভাপতিকে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে তাঁদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মীরা।
এবিষয়ে বিডিও শেখর শেরপা জানান, ‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি ই-মেল আসে। তাতেই আমি জানতে পারি জয়েন্ট বিডিও কল্যাণ আশিস দাসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরউদ্দিন। আমাকে সাতদিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলেছে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর। তবে আমি মনে করি এসব অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমি কয়েক মাস আগে এখানে যোগ দিয়েছি। আমার কোনওদিন মনে হয়নি কল্যাণ আশিস দাস কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আজ ব্লকের সমস্ত কর্মচারীরা এই অভিযোগের বিরুদ্ধে এক ঘণ্টা পেন ডাউন করেন। তাদের সঙ্গে আমারও দাবি, সভাপতি তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহার করুন।’
রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরউদ্দিন বলছেন, ‘নতুন বিডিও শেখর শেরপাকে ভুল বুঝিয়ে একের পর এক দুর্নীতি করে চলেছেন জয়েন্ট বিডিও। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, মানবিক ভাতা, বার্ধক্য ভাতা সহ রাজ্য সরকারের প্রতিটি প্রকল্পের উপভোক্তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন তিনি। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে সবুজ সাথী, মিড-ডে মিল, বিভিন্ন স্কুলের বিল্ডিং নির্মাণে উনি দিনের পর দিন দুর্নীতি করে চলেছেন। অনেক ক্ষেত্রে আমাকে অন্ধকারে রেখেই এসব করে চলেছেন তিনি। আমি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে এনিয়ে অভিযোগ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছি।’
এদিকে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ নৈমুদ্দিন বলছেন, ‘জয়েন্ট বিডিওর বিরুদ্ধে সভাপতির করা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে কেন অভিযোগ করলেন জানি না। সভাপতি বীরভূমের বাসিন্দা। শুনেছি সেখানে তিনি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। ব্লক দপ্তর আমাদের জানিয়ে রীতিমতো টেন্ডার ডেকে সব কাজ করে। সেখানে দুর্নীতির কোনও প্রশ্নই আসে না। সভাপতির যদি মনে হয় কোথাও কোনও দুর্নীতি কিংবা ব্লক প্রশাসন অসহযোগিতা করছে, সেক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি দেখা যেত। এর আগেও তিনি কনট্র্যাক্টর অ্যাসোসিয়েশন এবং টেন্ডার অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আমার মনে হয় মামলা তাঁর খুব পছন্দের।’