গৌরহরি দাস, কোচবিহার: বিমান নিয়ে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পোস্টকে ঘিরে ফের চাঞ্চল্য ছড়াল কোচবিহারে। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় রবিবাবু একটি পোস্ট করেছেন, তাতে তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন ‘কামিং সুন’। সেখানে ফ্লাই বিগ কোম্পানির বিমানের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। আর নির্বাচনের আগে তাঁর এই পোস্টকে ঘিরে কোচবিহারে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা অনেকে এটাকে ভোটের গিমিক বলেও মনে করছেন।
বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে রবিবাবু বলেন, ‘খুব শীঘ্রই এই কোম্পানির বিমান পরিষেবা কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে শুরু হবে। কোচবিহার-কলকাতা পর্যন্ত এই বিমান চলাচল করবে।’ দুটি ইঞ্জিনের বিমানটিতে ১৯টি আসন থাকবে বলে তিনি জানান। রবিবাবু আরও বলেন, ‘পাঁচ-ছয় মাস আগে এই কোম্পানির প্রতিনিধিরা এসে কোচবিহার বিমানবন্দরে সমস্ত সমীক্ষা করে গিয়েছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাদের সমস্ত কথাও হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই এই বিমান পরিষেবা কোচবিহার থেকে চালু হবে।
রাজার শহর কোচবিহারে রাজ আমল থেকেই বিমান পরিষেবা চালু ছিল। এরপর বাম আমলে নানা কারণে ১৯৯৫ সালে এই পরিষেবা পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বাম সরকার এরপর একাধিকবার এই পরিষেবা চালু করার চেষ্টা করলেও তারা আর করে উঠতে পারেনি।
২০১১ সালে রাজ্য সরকারের পরিবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যেই কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে পুনরায় বিমান পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু চালু হওয়ার পাঁচ-ছয়দিনের মধ্যেই সেই পরিষেবা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এরপর একাধিকবার তা চালু করার চেষ্টা করা হলেও দুই-চারদিন চলার পর বারবার তা মুখ থুবড়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত ২০১৬ সালের ফেব্রুযারি মাসে ফের তা বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর নিশীথ প্রামাণিকের উদ্যোগে ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ আসনের বিমান পরিষেবা এখানে শুরু হয়, যা এখনও চলছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পরিষেবা চালু থাকায় এই বিমানবন্দর নিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছে কোচবিহার। প্রত্যাশা আরও বেড়েছে এই বিমানবন্দর থেকে চালু থাকা উড়ানের প্রতিটি আসন ভর্তি থাকায়। বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, অসমের রূপসী বিমানবন্দর থেকে পরিষেবা চালু থাকলেও কোচবিহার বিমানবন্দর জেলার কাছে তো বটেই, নিম্ন অসমের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
হেরিটেজ ঘোষণা হওয়ার পর কোচবিহারে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। এয়ারপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার বিমানবন্দরের রানওয়ে ১০৬৯ মিটার। রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ানো সম্ভব হলে এই বিমানবন্দর থেকে পরিষেবা আরও বাড়ানো সম্ভব হবে।