প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: হাইকোর্টের রায়ে এসএসসি’র(SSC Scam) ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল বাতিল হওয়ায় আলিপুরদুয়ারের(Alipurduar School) নানা স্কুল এখন থেকেই প্রবল আশঙ্কায় ভুগছে। বেশ কিছু স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক একদমই নগণ্য। তাঁরা কাজ করা বন্ধ করলে কী করে পড়াশোনা সামাল দেওয়া যাবে তা ভেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলির উদ্বেগ বাড়ছে। কী করে সমস্যা মিটবে সে বিষয়ে কারও কিছু জানা নেই। পাশাপাশি, চাকরি নট হওয়া শিক্ষক–শিক্ষিকারা ও শিক্ষাকর্মীরাও উদ্বেগে রয়েছেন। একটি অংশ দোষ করলেও সামগ্রিকভাবে সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে সবার চাকরি কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না বলে তাঁরা জানিয়েছেন। সমস্যা মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জোরালো হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার ম্যাক উইলিয়াম হাইস্কুলে পাঁচজন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি বাতিলের তালিকায় রয়েছেন। এই শিক্ষকদের দুজন অঙ্ক ও একজন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন পড়ান। তাঁরা এই স্কুলের ইংরেজিমাধ্যমের পড়াশোনা দেখেন। তাঁদের চাকরি গেলে স্কুলে ইংরেজিমাধ্যমে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনায় বড়সড়ো প্রভাব পড়বে বলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিলচন্দ্র রায় মনে করছেন। আলিপুরদুয়ার বালিকা শিক্ষা মন্দির বিদ্যালয়ে এই প্যানেলে পাঁচজন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। এই শিক্ষকরা পদার্থবিজ্ঞান, ভূগোল, দর্শন ও কম্পিউটার সায়েন্স পড়ান। তাঁদের অনুপস্থিতিতে স্কুলে এই বিষয়গুলি পড়ানো খুবই সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়াবে বলে প্রধান শিক্ষিকা কাকলি ভৌমিক জানিয়েছেন। শিক্ষককর্মীর অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন সরকারি প্রলল্পগুলির কাজ মার খাবে বলেও তাঁর আশঙ্কা।
আলিপুরদুয়ার হাইস্কুলে ৪৩ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু সেখানে ৩৫ জন কর্মরত রয়েছেন। কয়েক বছর ধরে স্কুলে জীবনবিজ্ঞান, রসায়নে স্থায়ী শিক্ষক নেই। আদালতের রায়ে অঙ্ক বিভাগে দুজন, দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে একজন করে শিক্ষক কাজ হারাতে চলেছেন। প্রধান শিক্ষক শান্তনু দত্ত বললেন, ‘গুরুতর সমস্যা। কীভাবে এর মোকাবিলা করব জানা নেই।’ গ্রামীণ এলাকার চিত্রও ভয়ানক। আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের লোকনাথপুর হাইস্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৯০০। ৬৩ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও মোটে ৩২ জন রয়েছেন। হাইকোর্টের রায়ে সাতজন শিক্ষকতার চাকরি হারাবার মুখে। প্রধান শিক্ষক ক্ষিতীশ দেবনাথ বললেন, ‘এর জেরে সামগ্রিকভাবে স্কুলের পঠনপাঠনে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’ পরিস্থিতি সামাল দিতে কী করা উচিত তা কর্তৃপক্ষগুলির জানা নেই।