দার্জিলিং: শীঘ্রই সংস্কারের কাজ শেষ করে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের দার্জিলিংয়ের বাড়িটি। বর্তমানে জোরকদমে বাড়িটির সংস্কারের কাজ চলছে। দীর্ঘ বছর অবহেলায় পড়ে ছিল বাড়িটি। যা নিয়ে পর্যটক মহলে ক্ষোভ জমছিল। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িটি সংস্কারের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দ করেন। এরপরই দেশবন্ধুর সেই বাড়িটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়। বাড়িটি সংস্কারের কাজ চললেও নিয়মিত পর্যটকরা সেই বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।
১৯২৫ সালের ১৬ জুন দার্জিলিংয়ের বাড়িতেই চিত্তরঞ্জন দাশ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। হাজারো স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। পুরোনো বাড়ির পলেস্তারা ভেঙে নতুন করে পলেস্তারা করা হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া টিনের চাল পরিবর্তন করে নতুন টিন লাগানোর কাজ চলছে। পাশাপাশি গোটা বাড়ির মেঝেতে নতুন ধরনের কাঠ বসানো হচ্ছে। মেঝের কাজ শেষ করতে কমবেশি এক মাস সময় লাগবে। বাড়িতে থাকা মিউজিয়ামটিও সংস্কার করা হচ্ছে। নকশালবাড়ির বাসিন্দা হরেন সিংহ ও গোবিন্দ সিংহরা সেখানে কাঠের কাজ করছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘প্রতিদিন কমবেশি ছয়জন করে কর্মী গোটা বাড়িতে নানা ধরনের কাজ করছেন। কাঠ ও সিমেন্টের কাজ শেষ হয়ে গেলে রংয়ের কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি বাড়ির বাইরের অংশ এবং সিঁড়িতে পেভার্স ব্লক বসানো হবে।’
বাড়ির ভেতর বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের যে ছবিগুলি লাগানো হয়েছিল, সেগুলি একই অবস্থায় রয়েছে। নতুন করে সেখানে লাইট লাগানো হচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় গোটা বাড়ি মুড়ে দেওয়া হবে। সোমবার দমদমের বাসিন্দা অহনা ধর পরিবারের সঙ্গে দেশবন্ধুর বাড়িটি দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘বইয়ের পাতায় চিত্তরঞ্জন দাসের কথা পড়েছি। দার্জিলিং ঘুরতে আসার আগেই এই বাড়িটি ঘুরে দেখার পরিকল্পনা করেছিলাম। বাড়িটি সংস্কার করা হচ্ছে দেখে ভালো লাগল। সংস্কারের কাজ শেষ হলে আবার আসব।’
তবে চিত্তরঞ্জন দাশের বাড়ির সামনের রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। কেননা ওই রাস্তায় একাধিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, হোমস্টে গড়ে উঠেছে। বহু মানুষের ওই রাস্তায় আনাগোনা। স্থানীয় বাসিন্দা রাজেশ ছেত্রী, পূর্ণিমা তামাং-দের কথায়, ‘ইতিহাসের সাক্ষী এই রাস্তা তৈরির জন্য স্থানীয়রা মিলে পুরসভার দৃষ্টি আকর্ষণ করব। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মেরামত না হওয়ায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে।’