নকশালবাড়ি: ভোটের আগে মেচির তীরে বাঁধ তৈরির দাবিতে সরব হয়েছেন ভারত-নেপাল সীমান্তের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গত চার বছর ধরে মেচির বাঁধ তৈরির কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। গত চার বছরে বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁধের দাবিতে ভোট দিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। সামনে ফের লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু সীমান্তের ঝাপুজোত, বড়মণিরাম, কিলারামজোতের বাসিন্দাদের বাঁধের দাবি পূরণ হয়নি। ফি বছর বর্ষায় মেচি নিয়ে আতঙ্কে থাকেন নকশালবাড়ি ব্লকের বড় মণিরাম, কিলারাম, ঝাপুজোতের বাসিন্দারা। তাই, এবার বর্ষার আগেই মেচির অসম্পূর্ণ বাঁধ সম্পূর্ণ করার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। সেচ দপ্তরের দাবি, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
শিলিগুড়ি সেচ দপ্তর সূত্রে খবর, কার্সিয়াং ডিভিশনের বন দপ্তরের জায়গায় বাঁধের কাজ থমকে আছে। বন দপ্তরের অনুমতি না মেলায় গত চার বছর ধরে প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার বাঁধের কাজ আটকে আছে। শিলিগুড়ি মহকুমার সেচ দপ্তর থেকে চার বছর আগে খড়িবাড়ি ব্লকের মদনজোত থেকে নকশালবাড়ি ব্লকের মানঝা পর্যন্ত ভারত-নেপাল সীমান্তের মেচির তীরে চার হাজার মিটার পাথরের বাঁধ তৈরির কাজ চলছিল। ২০২০-এর ডিসেম্বরে কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছিল মেচি রিভার প্রোটেকশন স্কিম। যার অধিকাংশই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাঁধটির উপর পাথরের পিচিং সহ প্রায় ১৪ ফুট লম্বা রাস্তাও তৈরি হয়েছে। ফলে, এসএসবি জওয়ানরা খুব সহজেই বাঁধের উপর দিয়ে যানবাহন নিয়ে টহলদারি চালাতে পারবেন। এজন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ১২ কোটি টাকা। সর্বত্র কাজ হলেও কিলারাম, বড় মণিরামজোতে এসে থেমে গিয়েছে। ফি বছর বর্ষায় এই এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু কৃষিজমি। স্থানীয় কৃষক অমিত রাওতিয়া বলেন, ‘বর্ষা এলেই ঘুম উবে যায়। নদীর জল এলাকায় ঢোকে। দু’দিকে বাঁধ থাকলেও মাঝে বাঁধ নেই। ফলে, মেচির জল খুব সহজেই এলাকায় ঢোকে।’ আর এক বাসিন্দা পদমবাহাদুর তামাং বলেন, ‘গত বছর নদীর জলে ৯০ বিঘা কৃষিজমি তলিয়ে গিয়েছিল। এবার দ্রুত বাঁধ না দিলে বিস্তর ক্ষতির শঙ্কা। তাই আমাদের দাবি, মেচি রিভার প্রোটেকশন স্কিমের কাজ এখানে দ্রুত শুরু করা হোক।’
এপ্রসঙ্গে নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সজনী সুব্বা বলেন, ‘বাঁধের কাজ নিয়ে বহুবার ব্লকে জানিয়েছি। সেচ দপ্তরকে জানানো হয়নি।’ শিলিগুড়ি সেচ দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়ম গোস্বামী বলেন, ‘মেচি নদীর যে এলাকায় কাজটি থমকে গিয়েছে সেটি বন দপ্তরের জায়গা। তারা এতদিন অনুমতি দেয়নি। তাই, কাজ আটকে ছিল। এবছর অনুমতি দিয়েছে। সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ এলেই ওই এলাকায় দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’