রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (North Bengal Medical College) হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (HCCU) পরিষেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় বহু রোগীর অবস্থা সংকটজনক হওয়া সত্ত্বেও এই বিভাগে চিকিৎসার সুযোগ মিলছে না। অথচ প্রায় দেড় বছর আগে ২৪ শয্যার এইচসিসিইউয়ের উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু সেখানে এখনও মাত্র ১৪টি শয্যাতেই চিকিৎসার সুযোগ মেলে। কেন বাকি ১০টি শয্যা (Medical Bed) এখনও চালু করা গেল না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
অভিযোগ, নার্সিংহোমগুলোর চাপেই হাসপাতাল কর্তাদের একাংশ এখানকার এইচসিসিইউ পুরোপুরি চালু করছে না। অথচ গরিব মানুষকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের পরিষেবা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক অবশ্য বলছেন, ‘অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই কথা স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত মেডিকেল অফিসার সহ অন্যান্য কর্মীও প্রয়োজন।’
প্রতিদিন কমবেশি ১০০০ রোগী চিকিৎসাধীন থাকেন মেডিকেলে। এর মধ্যে একটা বড় অংশের সিসিইউয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় শয্যাসংখ্যা এতটাই কম যে, ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন থাকলে বাইরে আরও অন্তত ২০-২৫ জনের নাম অপেক্ষার তালিকায় লেখা থাকে। একজন সেই সিসিইউ ছাড়লে লাইনে থাকা অপরজন সেই শয্যায় চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। অভিযোগ, এই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে মৃত্যু হয় অনেক রোগীর।
সেই সমস্যা দূর করতে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে মেডিকেলে ২৪ শয্যার এইচসিসিইউ উদ্বোধন হয়। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ভার্চুয়ালি এই পরিষেবার উদ্বোধন করেছিলেন। প্রথমে কয়েকদিন ওই বিভাগ তালাবন্ধ ছিল। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীর ব্যবস্থা করে তা খোলা হয়। কিন্তু সেখানে এখনও পুরোপুরি ২৪টি শয্যা চালু হয়নি। ১৪টি শয্যায় রোগীদের রেখে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের অনেকেই বলেছেন, একটা বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে আইসিইউ, সিসিইউতে রোগীকে রাখতে গেলে রোজ ২৫-৩০ হাজার টাকা বিল হয়। ক’টা পরিবারের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব? মেডিকেলে আরও বেশি করে আইসিইউ, সিসিইউ শয্যার দাবি তুলছেন রোগী এবং পরিজনরা।
মেডিকেলের চিকিৎসকদের একটা অংশ বলছেন, ২৪ শয্যার এইচসিসিইউ উদ্বোধনের পর প্রায় দেড় বছর হতে চলল, এখনও বাকি ১০টা শয্যা চালু হল না। অথচ সেখানে মেডিকেল অফিসার, নার্স সহ স্বাস্থ্যকর্মী সব কিছুই দেওয়া রয়েছে। এভাবে নার্সিংহোমগুলোকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠছে স্বাভাবিকভাবে।