মালবাজার: আধুনিক নগরে উঠোন বলে আর কিছুই নেই। উঠোনের কোনায় বাহারি ফুল গাছ, কিংবা উঠোনের মধ্যে মাচা করে লাউ কুমড়োর ফলন সবই এখন স্মৃতিতে সীমাবদ্ধ। এখন ছাদের ওপর গাছ পালা চাষের বৈচিত্রই নজর কাড়ছে সকলের। ডুয়ার্সের মালবাজারেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। গাছপালা, ফুলের টব সবই লাগানো হচ্ছে ছাদ বাগানে। কারও ছাদ বাগানে জুঁই মল্লিকা, কারও ছাদে শোভা পায় গোলাপ, গাঁদা। এমনকি বিভিন্ন রকমের সবজি যেমন- কুমড়ো, লাউ, ঝিঙে, উচ্ছে সবই পাওয়া যাবে শখের ছাদ বাগানে।
মাল শহরে ছাদবাগানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই ছাদ বাগানের উদ্যোগীরা ভিন্ন ভিন্ন পেশায় যুক্ত। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবীণ বাসিন্দা ড. প্রণব কুমার সাহা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত উদ্ভিদবিদ। ফলে উদ্ভিদবিদ্যার কলা কৌশল কার্যত সবই রপ্ত তাঁর। বাগানকেউ সাজিয়েছেন মনের মতো করে। কি নেই তার বাগানে? এই চড়া রোদেও রয়েছে মোসাম্বি, হরেক রকমের জবা ফুল, বিশেষ প্রজাতির আম, দু ‘তিন ধরনের জামরুল ইত্যাদি। প্রণব বাবু বলেন, আমি কর্মজীবনে বাগান পরিচর্যার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। অবসর নেওয়ার পর ছাদ বাগানে পুরোপুরি নিজেকে নিয়োজিত করেছি। বাগান পরিচর্যা কোনও খামতি রাখি না। আমার ছাদের উপর ছাউনি নেই। এই সময় দারুন গরম পড়েছে। তাই বাড়তি নজর রাখতেই হচ্ছে। এখন গাছে দু’বেলা জল দেই। তাছাড়া গ্রীন কাপড় দিয়েও ঢেকে রাখার চেষ্টা করছি। যেভাবে হোক ওদের রক্ষা তো করতে হবে। এখন সকাল ন’টাতেই তাপমাত্রা ৩৩ ছুঁয়ে যাচ্ছে। এই সময়কালে গাছের পরিচর্যা করা খুবই জরুরি।‘ মাল পুরসভার প্রাক্তন পুর প্রধান পার্থ দাস। তিনি মাল পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয় করনিকের কাজ করতেন। বর্তমানে করণিকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। পার্থবাবু আগাগোড়া ছাদ বাগানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই যুক্ত। তিনি আবার বেশি করে বনৌষধি গাছ লাগানো এবং পরিচর্যা করতেই ভালোবাসেন। এবার নজিরবিহীন প্রখর রৌদ্রতাপে বাগানের দশা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। তা সত্ত্বেও কালো মেঘ, সিভিয়া সহ হরেক রকম গাছ রয়েছে। এমনিতে তিনি ছাদ বাগানে ড্রাগন ফুলও চাষাবাদ করেন। সব জৈবিক পদ্ধতিতেই যাবতীয় পরিচর্যা করেন।
ছাদ বাগান করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন মহল। মাল উদ্যানের বিট অফিসার গোপাল মাঝি বলেন, ‘ছাদ বাগান করলে অনাবিল আনন্দ মেলে। পরিবেশও ভালো থাকে।‘