উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে প্রায় ১১ ঘণ্টা ইডির জেরার পর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোলেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। এদিন রাত ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দপ্তর থেকে বেরিয়ে আসেন সায়নী ঘোষ। তবে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তলের সঙ্গে তাঁর লেনদেনের প্রসঙ্গ এড়িয়েছেন সায়নী। ইঙ্গিতে জানিয়েছেন, কুন্তলের সঙ্গে তাঁর কোনও লেনদেন হয়নি।
এদিন টানা ১১ ঘন্টা জেরার পর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে এসে সায়নী বলেন, ‘আমাকে কয়েকটা বেসিক ডকুমেন্ট নিয়ে ডাকা হয়েছিল। আমি ১০০ শতাংশ সহযোগিতা করেছি। আমাকে আবার ডাকবেন। কিছু নথির বিস্তারিত জমা দিতে হবে। আমাকে ১০০ বার ডাকলে আমি ১০০ বার আসব। আমাকে ২৪ ঘণ্টা জেরা করলেও আমি সহযোগিতা করব’।
এদিন রাত ৮টা নাগাদ যাবতীয় নথি পাঠানো হয় দিল্লিতে ইডির সদর দপ্তরে। রাত ১০টা নাগাদ জানা যায় বয়ান খতিয়ে দেখে আপাতত সায়নীকে গ্রেপ্তার করার দরকার নেই বলে জানিয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। এর পর জেরার অবশিষ্ট প্রক্রিয়া শেষ করে সায়নীকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয় ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে তলব করেছিল ইডি। ইডির তলবের পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না সায়নী ঘোষের। তাঁর দক্ষিণ কলকাতার বিক্রমগড়ের বাড়িতেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি ইডি দপ্তরে হাজিরা দেবেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। তিনি হাজিরা এড়াতে পারেন বলে জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ইডির তলবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে কলকাতায় ইডির সদর দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
এদিন সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে সায়নী ঘোষ বলেন, ‘‘আমি প্রচারের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমাকে ৪৮ ঘণ্টার নোটিসে ইডি ডেকেছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়েছি। আমি তদন্তে ১০০ শতাংশ সহযোগিতা করব।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা কুন্তল ঘোষ গ্রেপ্তার হতেই সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করার সময় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের নাম সামনে আসে। কুন্তলের কাছ থেকে সায়নী কোনও আর্থিক সুবিধা পেয়েছিলেন কি না তা-ও জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, সেই কুন্তলের যোগসূত্র ধরেই নিয়োগকাণ্ডে সায়নীর নাম জড়িয়েছে। তাঁকে আয়কর জমা দেওয়ার ফাইল এবং সম্পত্তির হিসাব যত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার তথ্য এবং লেনদেনের নথি আনতে বলা হয়েছিল।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সায়নী ঘোষের সঙ্গে কুন্তলের একাধিক লেনদেনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এমনকী সায়নীর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের ভাড়া দিতেন কুন্তল। কুন্তলের দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করতেন সায়নী। এমনকী দক্ষিণ কলকাতার একটি বিলাসবহুল আবাসনে সায়নীকে ২টি ফ্ল্যাট জুড়ে ১টি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন কুন্তল।