নাগরাকাটাঃ বোনাস জটিলতা কাটল পাহাড়ের চা বাগানের। শ্রম দপ্তরের হস্তক্ষেপে গত সোমবার সমস্যার সমাধান হয়। শিলিগুড়ির দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে আয়োজিত দুপুর থেকে রাত প্রায় ১০ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ম্যারাথন বৈঠকেও শ্রমিক ও মালিকপক্ষ বোনাসের হার নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছতে পারে নি। পরে উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অ্যাডভাইজারি জারি করে ১৯ শতাংশের বোনাস প্রস্তাব দেন। আর্থিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত বাগানগুলিকে বোনাস প্রদান নিয়ে স্থানীয় স্তরে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করার সংস্থান সরকারী অ্যাডভাইজারিতে রাখা হয়েছে। বোনাস নিয়ে যদি কোথাও কোন সমস্যা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে শ্রম দপ্তরের আঞ্চলিক শাখাগুলিতে বিষয়টি জানানো যেতে পারে।
শ্রম দপ্তর ও শ্রমিক সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গেছে, এদিনের বৈঠকে মালিকপক্ষ তাঁদের আগেকার ৯ শতাংশের প্রস্তাব সামান্য বাড়িয়ে এদিন ১২ শতাংশে বোনাস রফা করার কথা বলেন। যদিও শ্রমিক সংগঠনগুলি একযোগে তা প্রত্যাখান করে। তাঁদের দাবি ছিল ডুয়ার্স-তরাইয়ের বাগানের মতো অন্তত ১৯ শতাংশের বোনাসই দিতে হবে। দীর্ঘ আলোচনাতেও কোন পক্ষই তাঁদের অবস্থান থেকে সরে আসে নি। পরে শ্রম দপ্তর হস্তক্ষেপ করে বোনাসের বিষয়টি ঠিক করে দেয়।
তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান দীপক প্রধান বলেন, আশা করছি মালিকপক্ষ দ্রুত ১৯ শতাংশের বোনাস শ্রমিকদের হাতে তুলে দেবে। দার্জিলিং তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক সুরজ সুব্বা বলেন, মালিকদের অনড় মনোভাবের কারনে শ্রম দপ্তরের হস্তক্ষেপ ছাড়া বোনাসের হার ঠিক করার আর কোন বিকল্প এদিন হাতে ছিল না। ভারতীয় মজদুর সংঘের রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিত গুহ বলেন, পাহাড়ের চায়ের দাম সমতলের থেকে অনেক বেশী। সেক্ষেত্রে বোনাসের হার ডুয়ার্স-তরাইয়ের থেকে কম হবে তা মেনে নেওয়া কিছুতেই সম্ভবপর ছিল না।
এদিনের বৈঠকে পাহাড়ের ৮ টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাই উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হাজির ছিলেন মালিকপক্ষের সংগঠন ডিটিএ-র সম্পাদক সন্দীপ মুখোপাধ্যায়, আইটিএ-র পক্ষে সঞ্জয় বাগচি ও রাণা দে সহ টিপা-র প্রতিনিধিরা।