উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক : ১ মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিল। ফারাকটা ৫৩ দিনের। আর এই ৫৩ দিনেই ‘বাঘ’ থেকে কার্যত ‘মূষিক’ হয়ে গিয়েছেন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান। এদিন বসিরহাট আদালত থেকে বের হতেই স্ত্রীর হাত ছুঁয়ে কেঁদে ফেলেন শেখ শাহজাহান। বলেন ‘আল্লার কাছে দোয়া কোরো।’ একসময় তিনিই ছিলেন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের ভাগ্যবিধাতা। তার কথায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত। তার অত্যাচারের কাহিনী এখনও গ্রামের অলিতে গলিতে শোনা যায়।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার ৫৫ দিন পর ২৯ ফেব্রুয়ারি মিনাখাঁ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তাতেও একটুও টসকাননি শেখ শাহজাহান। বরং ধরা পড়ার পরও তাঁর পোশাক থেকে চালচলন ছিল রাজসিক। বরং তাঁকে ধরার পরও ১ মার্চ আদালতে পেশের সময় পুলিশকর্মীদেরই তাঁর ‘অনুগত’ বলে মনে হয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুধু আঙুল উঁচিয়ে শাহজাহানের দৃপ্ত পদচারণা রীতিমতো মনে গেঁথে আছে সকলের। সেই শাহজাহানই এখন ‘দুর্বল’। পরিস্থিতি যে ক্রমেই প্রতিকূল হচ্ছে তা বুঝতে পারছেন ‘সন্দেশখালির বাঘ’। তিনি নিজে এখন পুলিশের হাত ঘুরে সিবিআই হয়ে ইডির হেপাজতে। তার এক ভাই আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছে। আরেক ভাই সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি হয়েছে। ফলে পায়ের নিচের জমি যে সরে যাচ্ছে তা বেশ বুঝতে পারছেন শাহজাহান। মঙ্গলবার বসিরহাট আদালত থেকে বের হওয়ার সময়ই প্রিজন ভ্যানের জানলা দিয়ে স্ত্রীর হাতে হাত রাখেন শাহজাহান। ছিল কন্যা সহ পরিবারের লোকেরাও। চোখে জল ছিল স্ত্রীর। যা দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি শাহজাহান। কেঁদে ফেলেন তিনিও। শুধু আল্লার কাছে দোয়া করতে বলেন স্ত্রীকে। এরপরই মুখ ঘুরিয়ে মুছে নেন চোখের জল। এদিন শাহজাহানকে দেখে অনেকেই মনে করছেন শুধু বাইরে নয় ভেতরে ভেতরেও ভেঙে পড়েছেন শাহজাহান। আর ‘দুর্বল’ শাহজাহান যে অনেকেরই রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।