উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২৪ দিন অতিক্রান্ত, এখনও অন্তরালে সন্দেশখালির বাদশা শাহজাহান শেখ (Shahjahan Seikh)। গত বুধবার সন্দেশখালির (Sandeshkhali) সরবেড়িয়ায় তালা ভেঙে শাহজাহানের বাড়িতে ঢুকেছিল ইডি। তল্লাশি অভিযান শেষে ফেরার সময় তৃণমূল নেতার বাড়ির দরজায় নোটিস সাঁটিয়ে ফেরেন তদন্তকারীরা। সেই নোটিসে ২৯ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় সিজিও কমপ্লেক্স আধার কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড এবং নিজের পাসপোর্ট আকারের ছবি নিয়ে শাহজাহানকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারীরা। ইডির নির্দেশ মেনে সোমবার অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারি শাহজাহান আদৌ কেন্দ্রীয় এজেন্সির মুখোমুখি হন কি না, সেদিকে তাকিয়ে সব মহল।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। শাহজাহানের বাড়ি পৌঁছানোর পরই ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায় নেতার অনুগামীরা। সেদিন রীতিমতো মার খেয়ে এলাকা ছাড়তে হয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তাদের। গ্রামবাসীদের আক্রমণে পিছু হঠেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। মাথা ফেটেছিল তিন ইডি অফিসারের। তারপর থেকেই খোঁজ নেই শাহজাহান শেখের।
গত বুধবার ফের সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় ইডি আধিকারিকরা। তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, শাহজাহানের বাড়ি থেকে ১৯টি অরেজিস্ট্রিকৃত দলিল পেয়েছে ইডি। কলকাতার দু’টি নামি সোনার দোকান থেকে কেনা বেশকিছু গহনার বিল, এমনকী শাহজাহানের বাজার’ বা শেখ শাহজাহান মার্কেটের বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্টও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে শাহজাহানের নিজের নামে তিনটি জীবনবিমার কাগজপত্র, ২০১৮ সালে শাহজহানের দেওয়া আয়কর রিটার্নের ফাইল, বহু ব্যাক্তির বিমানের টিকিট, ভিসা, বিমার সার্টিফিকেট সংক্রান্ত বহু নথি। মেলেনি কোনও নগদ অর্থ। তদন্তকারী দলের এক সদস্যের কথায়, “শাহজাহানের বাড়ি থেকে হয়তো নগদ অর্থ মেলেনি, তবে অনেক কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে। যা তদন্তের কাজে আসতে পারে।”
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার শাহজাহান শেখ ইডির দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা না দিলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে ইডি। একই সঙ্গে শাহজাহানের খোঁজে ফের সন্দেশখালিতে অভিযান চালাতে পারে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
শাহজাহান শেখ কোথায়? সিপিএমের স্থানীয় প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের বিস্ফোরক দাবি, “বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই রয়েছেন শাহজাহান। ন্যাজাট এবং সন্দেশখালি থানার পুলিশই তাঁকে আশ্রয় দিচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে শাহজাহানের নিজস্ব বাহিনীও।”
সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও দাবি করেছিলেন, সন্দেশখালির ৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছেন শেখ শাহাজাহান। অন্যদিকে তৃণমূলের এগরার নেতা তথা কারামন্ত্রী অখিল গিরি দাবি করেছিলেন, চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন শাহজাহান। তবে তৃণমূলের একাধিক নেতা মন্ত্রীর বক্তব্য, শাহজাহান কোনও অন্যায় না করে থাকলে নির্দিষ্ট সময়েই ইডির অফিসে হাজিরা দেওয়া উচিত। এখন দেখার সোমবার সন্দেশখালির বাদশা শাহজানান শেখ সিজিওতে হাজিরা দেন কি না?