প্রসেনজিৎ সাহা, দিনহাটাঃ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে (টিআইসি) (teacher-in-charge)রোষের মুখে পড়তে হল। কী কারণে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই স্কুল ছুটি দেওয়া হল তা জানতে চেয়ে ওই শিক্ষিকাকে শোকজ (Show cause) করা হয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বড় আটিয়াবাড়ি–২ গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকা দিনহাটা মিশন গার্লস হাইস্কুলের (Dinhata Mission Girls High School) একই সীমানা প্রাচীরের মধ্যে দিনহাটা মিশন জুনিয়ার বেসিক স্কুল রয়েছে। শনিবার এখানে জুনিয়ার বেসিক স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল। একই মাঠে হাইস্কুলের বারান্দায় সমস্যা সমাধান জনসংযোগ শিবির বসেছিল। বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা ওই শিবিরে শামিল হয়েছিলেন। বেলার দিকে জেলা শাসক অরবিন্দকুমার মিনা ওই শিবির পরিদর্শনে এসে শিবির ঘুরে দেখার পাশাপাশি মিশন গার্লস হাইস্কুলও পরিদর্শন করেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এদিন গার্লস হাইস্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছিল। মিড–ডে মিলের পাটও বন্ধ রাখা হয়েছিল। এনিয়ে জেলা শাসক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কী কারণে এসব করা হল তা জেলা শাসক টিআইসি রূপা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান। টিআইসি উত্তর দিলেও তাতে জেলা শাসককে খুশি মনে হয়নি। স্কুলের তরফে বিষয়টি সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানানো হয়েছিল কি না তা জেলা শাসক তাঁর কাছে জানতে চান। লিখিতভাবে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলে সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক জানালে ওই টিআইসিকে শোকজ করতে জেলা শাসক নির্দেশ দেন।
টিআইসি বলেন, ‘সরকারি শিবিরের বিষয়ে লিখিতভাবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। শুধু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ করে বিষয়টি জানানো হয়। একই মাঠে অন্য স্কুলের খেলা হচ্ছিল। খেলাধুলো ও শিবিরের জন্য খুব হইহট্টগোল হচ্ছিল। ক্লাস করা যাচ্ছিল না। ফলে ছাত্রীদের নাম ডেকে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে বলে আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিই। সেইমতো কাজ করা হয়। মিড–ডে মিলও বন্ধ রাখা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এনিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি।’ সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) জয়ন্ত অধিকারী বলেন, ‘জেলা শাসক আমাকে ফোন করেছিলেন। তাঁর নির্দেশমতো ই-মেল ও হোয়াটসঅ্যাপে ওই শিক্ষিকাকে শোকজ লেটার পাঠানো হয়েছে। পাঁচদিনের মধ্যে উত্তর দিতে হবে।’ সময়মতো শোকজের উত্তর দেওয়া হবে বলে রূপা জানিয়েছেন।
তবে স্কুল প্রাঙ্গণে সরকারি অনুষ্ঠান নিয়ে অভিভাবকদের একাংশ সরব হয়েছেন। এবিটিএ’র মহকুমা সম্পাদক শুভেন্দু দাসও বলেন, ‘স্কুলগুলিতে এধরনের কর্মসূচি পঠনপাঠনে যথেষ্টই ব্যাঘাত ঘটায়। এ বিষয়ে সরকারের ভাবার সময় এসেছে। পাশাপাশি, এদিন স্কুলের মিড–ডে মিল বন্ধ করাও উচিত হয়নি।’ দিনহাটা-১’এর বিডিও গঙ্গা ছেত্রী বলেন, ‘এ দিনের শিবিরের বিষয়ে দু’দিন আগে বৈঠক করে বিদ্যালয় পরিদর্শকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে হাতে সময় না থাকায় স্কুলগুলিকে আলাদাভাবে অবগত করা যায়নি। তবে আমাদের কর্মসূচির জন্য ছুটি দিতে হবে বলে কখনোই স্কুলগুলিকে বলা হয়নি।’