শমিদীপ দত্ত, শিলিগুড়ি: কুকুরের জামা, খেলনা দিয়ে শুরু হচ্ছে ব্যবসা। ক্রেতাদের যাওয়া-আসা শুরু হতেই জাঁকিয়ে বসছে ওষুধের ব্যবসা। কুকুরের জামা, খেলনার আড়ালেই লাইসেন্স ছাড়া ওই ব্যবসায় সহযোগিতা করছেন প্রাণী চিকিৎসকদেরই (veterinary) একটা অংশ। তবে অবৈধ ওই ব্যবসা থেকে ওই চিকিৎসকরা নিজেদের আড়াল করতেই বাড়ছে ‘কোয়াক’-দের দৌরাত্ম্য। এই ‘কোয়াক’-রা আবার লালিতপালিত হচ্ছে ওই চিকিৎসকদেরই হাত ধরে। কোনও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই সারমেয় দেখার পর ওই ‘কোয়াক’-দের প্রেসক্রিপশন দেখে ওই দোকানগুলো থেকে দেওয়া হচ্ছে ওষুধ। করা হচ্ছে ভ্যাকসিনেশনও। চিকিত্সকরা আবার বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ প্রাণী দেখার পর প্রেসক্রিপশন সরাসরি পাঠিয়ে দিচ্ছে ওই দোকানেই। শহরবাসীর ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে এভাবেই একশ্রেণির মানুষ শহরের বিভিন্ন জায়গায় দোকান বানিয়ে অবোলা প্রাণীদের নিয়ে ব্যবসার নামে ছেলেখেলা শুরু করেছেন।
শনিবার শহরের (Siliguri) বিভিন্ন পেট শপে অসুস্থ পশুর অভিভাবক হিসেবে প্রধাননগর, এনজেপি এলাকার মেইন রোড থেকে শুরু করে অলিগলি ঘুরে বিভিন্ন পেট শপে ঢুকেই বেরিয়ে এসেছে এইসব তথ্য। প্রধাননগরের একটি পেট শপে ঢুকে অসুস্থ কুকুর চিকিৎসার ব্যাপারে বলতেই এক ব্যক্তি নিজেই বেশকিছু ওষুধ লিখে দিলেন। প্রশ্ন করা হল, ‘আপনার দোকানে ওষুধ রয়েছে। লাইসেন্স রয়েছে? প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর দিতে পারেননি।’ সেবক রোডের একটি পেট শপ-এও এমন পরিস্থিতি। শুধু তাই নয়, শহরের অধিকাংশ পেট শপেরই এক চিত্র। প্রসঙ্গত, বিতর্কে জড়ানো রবীন্দ্রনগরের পেট শপ-এরও লাইসেন্স সহ দোকান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি রয়েছে কিনা, সেটা অভিযোগের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখবে পুলিশ।
শহরজুড়ে প্রাণীদের নিয়ে চলা ছেলেখেলার ব্যাপারটা প্রাণীবিকাশ সম্পদ বিভাগের আধিকারিকরা জানেন না এমনটা নয়। খোদ যখন এক আধিকারিকই এসবের মধ্যে জড়িয়ে রয়েছেন, তাহলে আর না জানার কথা নয়। প্রাণীসম্পদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর চিকিৎসক তুফান মাইতি বলছেন, ‘এধরনের প্রাণী চিকিৎসার দোকান নিয়ন্ত্রণের কোনও উপায় নেই। কেউ প্রাণীর জামাকাপড় বিক্রি করতেই পারেন। এখন তারমধ্যে দিয়ে যদি ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করে থাকেন, ফার্মাসিস্ট ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করে থাকেন, তাহলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতাও আমাদের নেই।’