ভাস্কর বাগচী,শিলিগুড়ি: নানা এলাকাকে যানজটমুক্ত করতে ভেন্ডিং ও নন–ভেন্ডিং জোনে ভাগ করা হবে বলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। শিলিগুড়ি পুরনিগম এবারে সেই পদক্ষেপে অনেকটাই এগোল। শহরে এই অঞ্চলগুলি গড়ে তোলা হলে ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া অন্য কোনও এলাকায় বসে ব্যবসা করতে পারবেন না। যে সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নন–ভেন্ডিং জোনে রাস্তার ধারে বসে ব্যবসা করছেন তাঁদের ভেন্ডিং জোনে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভেন্ডিং জোনে যাঁরা ব্যবসা করবেন, পুরনিগমের তরফে তাঁদের ভেন্ডিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেয়র গৌতম দেব বললেন, ‘সরকারি নীতি মেনেই এই দুই জোন তৈরি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এগুলিকে কার্যকর করা হচ্ছে। যাঁরা ভেন্ডিং জোনে ব্যবসা করবেন তাঁদের ভেন্ডিং লাইসেন্স দেওয়া হবে।’
ভেন্ডিং জোনের জন্য শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৫২টি এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। জংশন ট্রাফিক গার্ড থেকে জংশন স্টেশনে যাওয়ার রাস্তার দু’ধার, এসজেডিএ বাজার ও মাল্লাগুড়ি বাজারের সামনের দিকটা ভেন্ডিং জোনে থাকছে। অন্যদিকে, হিলকার্ট রোড থেকে প্রধাননগরের নিবেদিতা নার্সিংহোম পর্যন্ত রাস্তা, গুরুংবস্তি থেকে শুরু করে বিশ্বদীপ সিনেমাহল, বিধান মার্কেটের পুরোনো ডুয়ার্স বাসস্ট্যান্ড, সেবক মোড় থেকে ভেনাস মোড়, ক্ষুদিরামপল্লির মতো এলাকাগুলিকে নন–ভেন্ডিং জোন করা হয়েছে। একইভাবে শালুগাড়া মোড় থেকে পেট্রোল পাম্প, এনজেপি মেইন রোড, নেতাজি মোড় থেকে ফুলেশ্বরী মোড়, পানিট্যাঙ্কি মোড়, সেবক মোড়, মহানন্দা সেতু থেকে চম্পাসারির বীর জওয়ান স্ট্যাচু পর্যন্ত এলাকার মতো কিছু জায়গাও নন–ভেন্ডিং জোনে রয়েছে।
নিবেদিতা রোডের দু’ধারে নর্দমা ও সরকারি জায়গায় প্রচুর দোকানপাট তৈরি হয়েছে। এর জেরে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এর জেরে এই ব্যবসায়ীদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নোটিশ দিয়ে জায়গা খালি করতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ওয়ার্ড কাউন্সিলার গার্গী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তবে নন–ভেন্ডিং জোন থেকে ব্যবসায়ীদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হলেও পুরনিগম একাজে তড়িঘড়ি করার পক্ষপাতী নয়। তারা এক্ষেত্রে ধীরে চলার নীতি নিয়েছে। তাই একে একে বিভিন্ন এলাকা ফাঁকা করা হচ্ছে।
ভেন্ডিং ও নন-ভেন্ডিং জোন নিয়ে সম্প্রতি প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও ব্যবসায়ী সমিতির তৈরি করা তালিকা কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। এবিষয়ে ওপরমহলের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর শিলিগুড়ি পুরনিগম দুটি এলাকাকে ভাগ করার প্রক্রিয়া শুরু করে। তাই বেশকিছু ওয়ার্ডে রাস্তা ও নর্দমা দ্খলমুক্ত করার কাজও চলছে। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ‘ব্যবসায়ী সমিতিগুলির সঙ্গে কথা বলেই এই কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করি কারও কোনও সমস্যা হবে না।’ তাঁরা পুরনিগমকে সহযোগিতা করবেন বলে ব্যবসায়ীরা আশ্বাস দিয়েছেন।