নকশালবাড়িঃ অটল চা বাগানের সফর বাতিল বলে খবর ছড়িয়ে পড়লেও রবিবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে নেমেই অটল চা বাগানের উদ্দেশ্য রওনা দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। এদিকে পুলিশ প্রশাসন থেকে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বরাও সফর বাতিল হয়েছে বলে নিশ্চিত ছিলেন। তাই আগেভাগেই মন্ত্রীর আগমনের কোন আয়োজন বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের থেকে করা হয়নি। এদিকে এশিয়ান হাইওয়ে-টু ধরেই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির বিশাল কনভয় এসে থামে অটল চা বাগানের সামনে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমেই বাগানের মন্দিরে পুজো দেন। তারপরেই মন্দির চত্বরে ঝাড়ু হাতে নিয়ে সাফাই অভিযানে নামেন।
এদিকে মন্ত্রীর আসার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় বিজেপি কর্মীদের জমায়েত শুরু হয়। মন্দির থেকে মন্ত্রীর কনভয় অটল চা বাগানের টিন লাইনে ঢোকেন। সেখানেই মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে শ্রমিক আবাসনের দিকে যান। সঙ্গে ছিলেন দার্জিলিং জেলার সাংসদ রাজু বিস্ট। টিন লাইনে স্মৃতি ইরানি কথা বলেন বাগান শ্রমিক রোশন ভুইয়া, মুনি মুন্ডা, তিলক মুন্ডা, রুনা মুন্ডার সঙ্গে। মন্ত্রী দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। এদিকে মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে শ্রমিকরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কাছে পেয়ের তাঁদের নানান সমস্যার কথা তুলে ধরেন। শ্রমিকদের দৈতিক ২৫০টাকা হাজিরার কথা শুনে তিনি জানান পার্লামেন্টে শ্রমিকদের ৩৫০ টাকা হাজিরা পাশ করা হয়েছে।
এলাকায় হাতির হানা, শ্রমিক আবাসনগুলির জরাজীর্ণ দশা হলেও কোনও সংস্কার হয়না, বাগান থেকে ত্রিপল দেওয়া হয় না, পানীয় জলের সমস্যার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি, তেমনি এলাকায় সোলার লাইট, ২০ শতাংশ হারে বোনাস, জমির পাট্রার দাবি তোলেন বাসিন্দারা। সাংসদ রাজু বিস্টকে দ্রুত এলাকায় সোলার লাইট বসানোর নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মন্ত্রীর সামনেই সাংসদ রাজু বিস্ট বাসিন্দাদের ১৫ দিনের মধ্যে এলাকায় সোলার লাইট বসিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তারপরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয় টিন লাইন থেকে বেরিয়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। স্থানীয় বাসিন্দা আনন্দ লোহার জানান, আমাদের এলাকায় প্রতিদিন হাতির দল হানা দেয় কিন্তু আমরা অন্ধকারে থাকি। গত বছর বাড়ির সামনে হাতি এসে একজন মহিলাকে মেরে ফেলেন। কিন্তু তারপরেও আমাদের এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পথবাতি দেওয়া হয়নি। আমরা আতঙ্কে থাকি। এই সমস্যাটি আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেছি। তিনি দ্রুত এলাকায় সোলার লাইট বসানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
অজয় গৌর জানান, বোনাসের সমস্যা আমাদের বাগানে রয়েছে। মালিক পক্ষ আমাদের সাড়ে আট শতাংশ বোনাস দিতে চাইছে। কিন্তু আমাদের দাবি ২০ শতাংশ। এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আমরা জানিয়েছি। পাশাপাশি পাট্টা নিয়েও আমরা মন্ত্রীকে বলেছি। তিনি সমস্যাগুলি দেখবেন বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।