দত্তপুকুর: দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের তদন্ত ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-কে দিয়ে করানোর দাবি তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সূত্রের খবর, এই দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাকে চিঠি লিখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের নীলগঞ্জে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। সাতসকালে তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা।
অভিযোগ, ওই বাড়িতে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করা হত। মজুত বাজিতে আগুন লেগেই আচমকা বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ঘটনার পরই তাঁরা বাজি কারখানার মালিক নাজিবুল রহমানের বাড়িতে হানা দেন। বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় সহ বিশাল পুলিশবাহিনী।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাঁদের বক্তব্য, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ৫০-১০০ মিটার দূরে ছিটকে পড়েছে কর্মরত শ্রমিকদের দগ্ধ দেহ। এমনকি চিলেকোঠার ছাদেও তা ছিটকে যায়।
ঘটনাস্থলের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছিন্নভিন্ন দেহাংশ। যে পাকা বাড়িটিতে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করা হত, তা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকেই আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা পুলিশ ও স্থানীয়দের। উদ্ধার কাজ জারি রয়েছে। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদল ও প্রশাসনের মদতেই অবৈধ বাজি কারখানার রমরমা। যদিও এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূলের। এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানান, এই বাজি কারখানা সম্পর্কে তাঁর আগে কোনও ধারণা ছিল না। রবিবারই জেনেছেন বিষয়টা।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এবার এনআইএ তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাকে চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তবে দোষীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ পেয়েই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।