প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ছড়াল বেনজির চাঞ্চল্য। আচমকা সুপ্রিম কোর্টে উদয় হলেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিক। কে তাকে নিয়ে এল? কেনই বা নিয়ে এল? কী কারণে শীর্ষ আদালতে চলে এলেন ইয়াসিন? এসব প্রশ্নের জবাব এখনও পাওয়া যায়নি, তবে ইয়াসিন মালিকের আচমকা সুপ্রিম কোর্টে এহেন আগমনে রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ল চাঞ্চল্য।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সপ্তাহের শেষ কর্মব্যস্ত দিনে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর এজলাসে চলছিল এক বিশেষ মামলার শুনানি। বিচারপতিরা শুনানি শুরু করার মুহূর্তে সবার চোখ পড়ল আদালতের এক কোনে পুলিশি প্রহরায় দাঁড়িয়ে থাকা ‘জঙ্গি’, দেশদ্রোহে অভিযুক্ত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের দিকে৷ সাথে সাথেই শুরু হল কানাঘুষো৷ বিচারপতিরাও হতবাক৷ ইয়াসিন মালিক শীর্ষ আদালতে কী করছেন, তা নিয়ে শুরু হল জল্পনা। অথচ যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই ব্যক্তির কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই৷ সে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে এজলাসের এক প্রান্তে৷ সবার আগে মুখ খোলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা৷ সরাসরি বিচারপতিদের উদ্দেশ্য করেন, ইওর লর্ডশিপ! এই ব্যক্তি এখানে কি করছে? বিচারপতিরাও সমস্বরে জানালেন, তাঁরাও একই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেন৷ সলিসিটর জেনারেল জানতে চাইলেন, শীর্ষ আদালত কি সশরীরে ইয়াসিন মালিক’কে আদালতে হাজিরার কোনও নির্দেশ দিয়েছিল? বিচারপতিরা জানালেন তাঁরা এমন কোনও নির্দেশ দেননি৷ তাহলে হাই প্রোফাইল অভিযুক্ত, পাক মদতপুষ্ট ‘জঙ্গি, তিহাড় জেলে বন্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিক পুলিশ পাহারায় সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে পৌঁছল কি করে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেশি সময় নষ্ট না করে রাতারাতি মামলার শুনানি স্থগিত রাখেন দুই বিচারপতি৷ স্থির হল, কোনও মামলার শুনানিতে প্রয়োজন হলে ভিডিও কনফারেন্সিং-র মাধ্যমে হাজির করা হবে ইয়াসিন মালিককে৷ তারই মাঝে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত৷ এখানেই শেষ নয়৷ কয়েক ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি লিখলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা৷ জানতে চাইলেন কিভাবে ইয়াসিন মালিকের মত জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সশরীরে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছল? এই ঘটনায় ইয়াসিন মালিককে কেউ কিডন্যাপ করতে পারত, কেউ যদি তার প্রাণহানির চেষ্টা করতো, এমন আশঙ্কা অমূলক নয় বলে নিজের লেখা চিঠিতে দাবি করেছেন এসজি তুষার মেহতা। যত দ্রুত সম্ভব এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় সরকার, এমনই দাবি এদিন জানানো হয়েছে এসজি-র চিঠিতে, এমনটাই সূত্রের দাবি। বলার অপেক্ষা রাখে না, গোটা ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ মহলেও৷