জামালদহ: মাস খানেক আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাগান বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। পুজোর আগে যখন সারারাজ্য উমা মায়ের আগমন নিয়ে ব্যস্ত তখন শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখে চুপিসারে পলায়ন চা বাগান মালিকের। অভিযোগ, চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের এক মাসের মজুরি দেয়নি মালিকপক্ষ। এমনকি, পুজোর আগে তাঁদের প্রাপ্য বোনাসও দেওয়া হয়নি। এই বিষয় নিয়ে শ্রমিকেরা বাগান মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে উঠে এসেছে মালিকপক্ষের তরফে গোপনে চা বাগান বিক্রির প্রচেষ্টা। সেই কারণে রবিবার বিক্ষোভ দেখালেন চা বাগানের শ্রমিকেরা।
গোপনে চা বাগান বিক্রির প্রচেষ্টার বিষয়ে উঠে এসেছে তৃণমূল ও বিজেপির দুই স্থানীয় হেভিওয়েট নেতার নাম। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে এবিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কাজ হারানো শ্রমিকেরা। এমনই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে মেখলিগঞ্জ ব্লকের জামালদহে। জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৩ রতনপুর এলাকায় রয়েছে ৩০ বিঘা এক চা বাগান। সেই বাগানে কাজ করে ১৬টি পরিবার চলে। ৩০ বছর আগে শিলিগুড়ি শহর নিবাসী এক ব্যক্তি এই জমি কেনেন। তিনি সেখানে চা বাগান করেন। জানা গিয়েছে, সেই ব্যক্তি মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলের হাতে চা বাগান দেখভালের দায়িত্ব এসে পরে। এরপর থেকে এই চা বাগানে টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
বাগানের শ্রমিকরা জানান, যখন চা বাগানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেসময় মালিকপক্ষ বলেছিল পরিবার প্রতি একজনকে কাজ দেওয়া হবে। কোনওদিন যদি মালিকপক্ষ বাগান বিক্রি করে তবে জমিদাতাদের সেই সময়ের জমির মূল্য হিসেবে ফেরত দেবে। কিন্তু এখন শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখে চা বাগানের জমি বিক্রি করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই মেখলিগঞ্জের মহকুমা শাসক, বিডিও, লেবার কমিশনার ও জেলাশাসককে আবেদন জানানো হয়েছে। পুনরায় বাগান চালুর দাবিও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে বাগানের মালিক সুব্রত সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে ফোন না তোলায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। মেখলিগঞ্জের নবনিযুক্ত বিডিও অরিন্দম মণ্ডল বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।