রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: দক্ষিণবঙ্গের উলুবেড়িয়ার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চটুল গানের তালে নাচের ভিডিও মঙ্গলবারই ভাইরাল হয়েছে। আর এদিনই শিলিগুড়ির আরেক শিক্ষকের মদের গ্লাস মাথায় নিয়ে নাচের ভিডিও ভাইরাল হল, যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শহর থেকে গ্রাম। খড়িবাড়ির দিলশারামজোত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের নাম অমিত দত্ত। তিনি শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দা।
একজন শিক্ষকের এহেন ভিডিও নিয়ে শাসক থেকে বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্দরেও রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। অমিত অবশ্য বলেছেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এভাবে খবর হওয়া উচিত নয়।’ শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি দিলীপ রায় এই ঘটনা শুনে আঁতকে উঠেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘এই সমস্ত ভিডিও সমাজমাধ্যমে দেওয়া উচিত হয়নি। একজন শিক্ষকের অনেক বিষয় মাথায় রেখে চলতে হয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
উলুবেড়িয়ার শামপুর ১ নম্বর ব্লকের বিনোদচক তফশিলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মঞ্চে উঠে জামা খুলে চটুল গানের তালে নাচছেন, এমন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে মঙ্গলবার সকালেই। যা দিনভর রাজ্যের অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। তারপরই অমিতের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে।
গৌতম দেব উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী থাকাকালীন অমিত তাঁর আপ্তসহায়ক ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হিসাবেও কাজ করেছেন। সেই থেকেই অমিত ক্রমশ চারিদিকে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরিও পান। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অমিত গৌতম দেব এবং পার্টি সব কিছু থেকেই দূরত্ব রাখছেন। বরং তিনি শিক্ষকতাই মন দিয়ে করছেন। অন্তত দিলশারামজোত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জের কথা অনুযায়ী অমিত প্রতিদিন স্কুলে উপস্থিত থাকেন।
এহেন একজন শিক্ষক মঙ্গলবার সকালে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। ভিডিওটি দার্জিলিংয়ের বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি হোটেলের লনে অমিত মাথায় মদের গ্লাস এবং মুখে সিগারেট নিয়ে একটি হিন্দি গানের তালে নাচছেন। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ ওই ভিডিও দেখে ফেলেছেন। তৃণমূলের অন্দরেও এই নিয়ে তীব্র আলোড়ণ পড়েছে। একজন শিক্ষক সমাজমাধ্যমে এমন ভিডিও দিলে ছাত্ররা কী শিখবে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ‘ব্যক্তিগত জীবনে একজন যা কিছু করতেই পারেন। কিন্তু সেটাকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ছাত্রমনে কুপ্রভাব পড়ার শঙ্কা থেকে যায়। একজন শিক্ষকের এমনটা করা উচিত নয়।’